প্রেমিকা কোর্ট নম্বর দুই-কে বলেছিলেন ‘বিপজ্জনক’! প্রেমিক কোর্ট নম্বর তিন-কে বললেন ‘খেলার অযোগ্য’!
উইম্বলডনে দু’জনের দশাও এক! দু’দিন আগে হেরেছিলেন মারিয়া শারাপোভা। আজ হেরে গেলেন গ্রিগর দিমিত্রভ। শারাপোভার মতোই দ্বিতীয় রাউন্ডেই। এবং আরও খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে।
শারাপোভা বারতিনেক পিচ্ছিল ঘাসে পা হড়কে আছাড় খেয়েছিলেন। দিমিত্রভ গত কালের অসমাপ্ত পঞ্চম সেটের ১৭তম গেমে ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচাতে গিয়ে হড়কান। ওই গেম চলাকালীনই হ্যামস্ট্রিং চেপে ধরে গরগর করতে করতে কোর্টের পাশে চেয়ারে বসে পড়ে পাশেই চেয়ার আম্পায়ারকে কোর্টের বাপবাপান্ত করতে থাকেন। ‘বেবি ফেড’-এর মেডিক্যাল সাহায্য নিয়ে কোর্টে ফেরার জন্য এগারো মিনিট খেলা বন্ধ ছিল। গোটা ঘটনার প্লেয়ার্স বক্স থেকে গোমড়া মুখে সাক্ষী থাকেন শারাপোভা। প্রাক্তন টেনিস তারকা ব্র্যাড গিলবার্ট টুইট করেন, “ওয়াহ! দিমিত্রভ ভার্সাস জেমলিয়া শো-টাইমের কী দুর্দান্ত মুহূর্তে বিরতি চলছে! চূড়ান্ত সেটে ৮-৯...৩০-৪০!” কোর্টে ফিরেও মিনিট তিনেক নকিং করার পর ম্যাচ চালু করে দিমিত্রভ সে যাত্রায় ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচালেও নিজের পরের সার্ভিসটাই খুইয়ে মীমাংসূচক পঞ্চম সেট হারেন ৯-১১-এ। প্রচণ্ড বিরক্ত দিমিত্রিভ বলেছেন, “আছাড়ই শুধু খাইনি। কোমরের নীচে যন্ত্রণাও পেয়েছিলাম। চেয়ারম্যানকে তাই বলেছিলাম, আমি আর এই খেলার অযোগ্য কোর্টে সার্ভিস করব না।”
ওই কোর্টেই পরের ম্যাচে য়ুরগেন মেলজারের কাছে হেরে বিদায় নেন ফেডেরার-সংহারক স্টাকোভস্কি। এবং সেই ম্যাচেও এক সময় দুই প্লেয়ারকেই দেখা যায়, কোর্ট থেকে ঘাস তুলে আম্পায়ারকে ডেকে পরীক্ষা করাতে! |
উইম্বলডনে এক টুকরো লর্ডস। স্বদেশীয় লরা রবসনের ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে সস্ত্রীক
অ্যালিস্টার কুক, অ্যান্ড্রু স্ট্রস, জিওফ বয়কট এবং অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। শুক্রবার। ছবি: রয়টার্স |
বৃষ্টি ভেজা দিনে ছাদ ঢাকা সেন্টার কোর্টে নেমে অ্যান্ডি মারেকে অবশ্য ঘাস-সমস্যায় পড়তে হল না। স্পেনের টমি রব্রেদোকে ৬-২, ৬-৪, ৭-৫ হারিয়ে সহজে চতুর্থ রাউন্ডে গেলেন মারে।
তবে মারে নির্বিঘ্নে জিতলেও অঘটনের উইম্বলডনে পঞ্চম দিনেও দু’টো অঘটন ঘটল। জের্জি জাঙ্কোভিচের কাছে নিকোলাস আলমাগ্রো হেরে বসায় ড্রয়ের নীচের অর্ধে দ্বিতীয় রাউন্ড শেষেই অ্যান্ডি মারের ফাইনালে ওঠার পথে সেরা বাছাই বলতে বেঁচে থাকলেন ২০ নম্বর রুশ মিখাইল ইউজনি। আর সপ্তম বাছাই অ্যাঞ্জেলিক কের্বার এস্তোনিয়ার কাইয়া কানেপি-র কাছে হারায় গ্র্যান্ড স্ল্যামের ৪৫ বছরের ওপেন যুগ ইতিহাসে এ বারের উইম্বলডনই হয়ে থাকল মেয়েদের প্রথম দশ বাছাইয়ের সমবেত নিকৃষ্টতম পারফরম্যান্স। প্রথম দশ বাছাইয়ের মধ্যে মাত্র চারজন তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছতে পেরেছেন!
যেমন জকোভিচের কাছে গত রাতে ৩০ বছর বয়সি কোয়ালিফায়ার ববি রেনল্ডসের হারে ১০১ বছরের ইতিহাসে উইম্বলডনে পুরুষ সিঙ্গলসে মার্কিনদের নিকৃষ্টতম পারফরম্যান্স হল এ বারই। টুর্নামেন্ট তৃতীয় রাউন্ড পৌঁছনোর আগেই এগারো মার্কিন পুরুষের কেউ থাকলেন না। যেখানে উইম্বলডনে সর্বাধিক বার (৭) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির রজার ফেডেরারের সঙ্গে এক মার্কিনেরই— পিট সাম্প্রাস। বর্তমান শতাব্দীতেই এক মার্কিন তারকার (অ্যান্ডি রডিক) তিন বার (২০০৪-’০৫-’০৯) উইম্বলডন ফাইনাল খেলার নজির আছে। ‘দুঃখিত’ জোকার বলেছেন, “আমেরিকায় শুনি কলেজ টেনিসে প্রচুর প্রতিভাবান তরুণ রয়েছে। আশা করি সামনের কয়েক বছরের মধ্যে ওরা গ্র্যান্ড স্ল্যামে নিজেদের প্রতিভা দেখানোর মতো বড় হয়ে উঠবে।” |