|
|
|
|
ঝলমলে সকালে নয়া উদ্যমে উদ্ধার শুরু
সংবাদসংস্থা • দেহরাদূন |
মেঘের চাদর সরিয়ে আজ সক্কালবেলাই দেখা মিলেছে সূর্যের। দুর্যোগ ক্রমশ কাটতে থাকায় বন্যাবিধ্বস্ত উত্তরাখণ্ডে তাই নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। এখনও ১২৩৭ জন মানুষ আটকে রয়েছেন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। তাই আজ দিনভর আকাশে পাক খেতে দেখা গেল ১৭টি হেলিকপ্টারকে।
তবে এই ঝলমলে সকালের রেশ অবশ্য কেটে গিয়েছিল এক বারই। আজ অল্পের জন্য জোর বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে সেনাবাহিনীর একটি বিমান। তিন দিনও কাটেনি, খরস্রোতা মন্দাকিনীর বুকে এমআই-১৭ চপার ভেঙে পড়ায় তলিয়ে গিয়েছেন ২০ জন। সেই স্মৃতি উস্কে দিয়ে এ দিন হরশিল হেলিপ্যাডে জরুরি অবতরণ করে একটি পবনহংস হেলিকপ্টার। নামার সময় কপ্টারের লেজের দিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। নিরাপদে আছেন যাত্রীরা।
গত কাল শোনা গিয়েছিল, ‘অপারেশন সূর্য হোপ’ শুক্রবারের মধ্যেই গুটিয়ে ফেলতে চলেছে সেনাবাহিনী। এ নিয়ে স্বজনহারাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধে। তা সামাল দিতে আজ একসঙ্গে আসরে নামেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে ও সেনা প্রধান বিক্রম সিংহ। যত দিন এক জন মানুষও পাহাড়ে আটকে রয়েছেন, সেনাবাহিনী উত্তরাখণ্ড ছাড়বে না আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা দু’জনেই। |
খাবার ও পানীয় জলের অভাবের মধ্যে ১০ দিন বদ্রীনাথের হোটেলে আটকে থেকে বৃহস্পতিবার
রাতে বাড়ি ফিরলেন বাঁকুড়ার সোনামুখী ও কোতুলপুরের ২৭ জন পুণ্যার্থী। ধসে আটকে কয়েকজন
অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক’দিন আগে সেনাবাহিনীর চপারে বদ্রীনাথ থেকে ভিন্ রাজ্যের দর্শনার্থীদের সঙ্গে
তাঁরা গোচরে আসেন। পরে সড়কে দেহরাদূন হয়ে বিমানে কলকাতায় ফেরেন। চপারে ছবিটি তুলেছেন বিজয় ঘোষাল। |
দেহরাদূনে আজ চপার দুর্ঘটনায় মৃতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন শিন্দে। পরে তিনি জানান, ধ্বংসস্তূপের তলায় কত জন চাপা পড়ে রয়েছেন তা স্পষ্ট নয়। নিখোঁজ অন্তত তিন হাজার। এখনও উদ্ধারকাজ বাকি বদ্রীনাথে। সেখানে আরও কপ্টার পাঠানো হবে বলে জানান তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের উদ্দেশে গ্যাস, কেরোসিন তেল, খাবার পৌঁছনোর কাজও জোরকদমে চলছে। আর কী কী ধরনের সাহায্য রাজ্য সরকারের চাই, তার একটি তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রের কাছে জমা দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বন্যার পর যাতে মড়ক না লাগে, তা দেখতে উত্তরাখণ্ড যাচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি দল। এই ব্যাপক ধ্বংসলীলার ছবিটা পাল্টাতে আজ ১৯৫ কোটি টাকার অর্থসাহায্য ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী চিরঞ্জীবী। কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী এই চারধামে পুণ্যার্থীরা যাতে আবার যেতে পারেন, তাই রাস্তাঘাটের কাজে ওই টাকা খরচ করা হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।
দেহরাদূনে আজ এক দিনের সফরে পৌঁছন সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহও। যে কঠিন পরিস্থিতিতে সেনারা প্রাণপাত করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে তাঁর গলায় প্রশংসার সুর ঝরে পড়ে। জানান, ছুটি বাতিল করে এই কর্মযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়েছে গঢ়বাল রাইফেলসের একটি দল। যদিও তাঁদের অনেকেরই ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে বন্যার জল।
বিক্রম সিংহ জানান, বদ্রীনাথের উত্তরে ৪০ জন আটকে পড়েছেন বলে খবর মিলেছিল কালই। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। যত দিন না শেষ ব্যক্তি উদ্ধার হচ্ছেন, উদ্ধারকাজ থামবে না। ফলে আরও দিন পনেরো সেনাবাহিনীর কপ্টার উত্তরাখণ্ডে থাকবে বলেও আশ্বাসবাণী শুনিয়েছেন তিনি।
এ দিকে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হরশিল থেকে আজ সবাইকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে বদ্রীনাথে এখনও অপেক্ষা করছেন ১৪০০ মানুষ। গত দু’সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝে চলেছেন যে মানুষগুলো, উদ্ধারকাজের নামে তাঁদের যেন আর কষ্ট সইতে না হয় সে বিষয়েও প্রশাসনকে নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। |
পুরনো খবর: উদ্ধার শেষের পথে, এখনও নিখোঁজ ৩ হাজার |
|
|
|
|
|