ঋজু প্রশাসনের ইঙ্গিত। আর সংস্কারের সামান্য সঙ্কেত। এই দু’য়ে ভর করেই শুক্রবার ঘুরে দাঁড়াল টাকা। ডলারের সাপেক্ষে তার দাম চড়ল ৮০ পয়সা (গত ন’মাসে সব থেকে বেশি)। দিনের শেষে ৬০-এর নীচে নেমে এল ডলার। থিতু হল ৫৯.৩৯ টাকায়। চাঙ্গা শেয়ার বাজারও। এক ধাক্কায় প্রায় ৫২০ পয়েন্ট উঠেছে সেনসেক্স। ফের তা ঢুকে পড়েছে ১৯ হাজারের ঘরে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ব বাজারে অনিশ্চয়তা একটা কারণ ঠিকই। কিন্তু বাজার মনে করে, ভারতীয় অর্থনীতির ধুঁকতে থাকা কিংবা টাকার মুখ থুবড়ে পড়ার বড় কারণ কেন্দ্রের নীতিপঙ্গুত্বও। কারণ, সারা বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অর্থনীতি যে একেবারে কোণঠাসা, এমন নয়। বরং তার থেকে অনেক বড় সমস্যা লগ্নিকারীদের আস্থার অভাব। দেশের শিল্পমহল বা বিদেশি বিনিয়োগকারী অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে কেন্দ্র যে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সেই বিশ্বাস প্রায় খোয়াতে বসেছিল সকলেই। তাই নতুন লগ্নি তো আসছিলই না। অনিশ্চয়তা বাড়ছিল পুরনো লগ্নি নিয়েও। এ দিন টাকা ও বাজারের ঊর্ধ্বমুখী দৌড়ের মূল কারণ কিছুটা হলেও সেই আস্থা ফেরা।
তলানিতে ঠেকা টাকা আর ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে অক্সিজেন জোগাতে কয়েক দিনই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। রাজনৈতিক বিরোধ সত্ত্বেও শিল্পের কথা মাথায় রেখে বাড়ানো হয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম। পরিকাঠামোকে চাঙ্গা করতে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ছ’মাসে ১.১৫ লক্ষ কোটি টাকা ঢালার কথা জানিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। চলতি খাতে বাণিজ্য লেনদেনে ঘাটতি কমেছে দেখাতে নির্ধারিত সময়ের দু’দিন আগেই পরিসংখ্যান পেশ করেছে কেন্দ্র। জোর দেওয়া হচ্ছে বিদেশি লগ্নি টানায়। আশা আর আস্থার এই পরিবেশই এ দিন টাকা ও বাজারে প্রাণ ফিরিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি। অনেকেই মনে করছেন, স্রেফ আতঙ্কে ৬০-এর তলানিতে চলে গিয়েছিল টাকা। তাই এখনও তাকে নিয়ে আশঙ্কা বহাল থাকলেও, দীর্ঘ মেয়াদে এমনিতেই তার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর কথা।
|