ব্যাঙ্কিং ব্যবসায় পা রাখার পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে শ্রেয়ী ইনফ্রাস্ট্রাকচার আর ম্যাগমা ফিনকর্প। এ বার কলকাতার তৃতীয় সংস্থা হিসেবে সেই একই দৌড়ে সামিল হওয়ার কথা জানাল ক্ষুদ্র-ঋণ (মাইক্রো ফিনান্স) সংস্থা বন্ধন।
সম্প্রতি এ নিয়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে সংস্থার পরিচালন পর্ষদে। ঠিক হয়েছে, ব্যাঙ্কিং লাইসেন্সের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন জানাবে বন্ধন। সংস্থার দাবি, প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেলে, ব্যাঙ্ক গড়ার জন্য তাদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স কর্পোরেশন (আইএফসি)।
চেয়ারম্যান এবং এমডি চন্দ্রশেখর ঘোষের দাবি, “ব্যাঙ্ক খোলার জন্য শীষর্র্ ব্যাঙ্কের সমস্ত শর্তই আমরা পূরণ করতে সক্ষম। শেষ পর্যন্ত অনুমতি পেলে, কেন্দ্রের সকলের জন্য উন্নয়ন (ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন) কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বন্ধন।”
ব্যাঙ্কিং লাইসেন্সের জন্য যে সব ন্যূনতম শর্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গোড়াতেই বেঁধে দিয়েছে, তার মধ্যে আছে
• কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকার মূলধন।
• মোট শাখার অন্তত ২৫% হতে হবে ব্যাঙ্ক না-থাকা গ্রামাঞ্চলে।
এ প্রসঙ্গে চন্দ্রশেখরবাবুর দাবি, “বন্ধনের নিট সম্পদ ৯০০ কোটি। শাখা ১,৮০৪টি। যার ৪৫ শতাংশই ব্যাঙ্ক না থাকা অঞ্চলে। সমস্ত শাখাকেই ব্যাঙ্কের শাখায় পরিণত করা হবে। ৬৯১টি হবে পুরোদস্তুর শাখা। বাকিগুলিকে গড়ে তোলা হবে শীর্ষ ব্যাঙ্কের অতি ক্ষুদ্র শাখা (আলট্রা স্মল ব্রাঞ্চ) মডেল অনুযায়ী।” সংস্থার অধিকাংশ শাখাই পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে রয়েছে বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু পুরোদস্তুর ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় চলে যাওয়ার পর, ক্ষুদ্র-ঋণ সংস্থা হিসেবে যে-পরিষেবা সমাজ পাচ্ছিল, তার কী হবে?
চন্দ্রশেখরবাবুর জবাব, ব্যাঙ্ক হিসেবে কাজ করলেই বরং সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটানোর সুযোগ বেশি। কারণ হিসেবে তাঁর যুক্তি, শুধু ক্ষুদ্র-ঋণ দেওয়ায় আমানত সংগ্রহের অনুমতি সংস্থার নেই। তাই ঋণের টাকার সংস্থান করতে আইএফসি, সিডবি এবং ৩৩টি ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নিতে হয় তাঁদের। কিন্তু ওই ঋণের জন্য গড়ে ১৩-১৪% সুদ গুনতে হয়। এর সঙ্গে আনুষঙ্গিক খরচ যোগ করে গ্রাহকদের ২২.৯% সুদে ক্ষুদ্র-ঋণ দেয় বন্ধন। চন্দ্রশেখরবাবুর দাবি, “ব্যাঙ্ক চালু করতে পারলে, সরাসরি আমানত সংগ্রহ করা যাবে। এবং তা বণ্টন করা যাবে ঋণ হিসেবে। ফলে তহবিল সংগ্রহের খরচ কমবে। আমাদের হিসাব অনুযায়ী, এর ফলে ঋণে সুদ কমানো সম্ভব হবে এখনকার থেকে অন্তত ১০ শতাংশ।” |