কলাকেন্দ্র নিয়ে সমাধান সূত্র মিলতে পারে আলোচনার টেবিলে। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) দায়িত্বে থাকা জলপাইগুড়ির কলাকেন্দ্রকে বেসরকারি পেশাদার বিনোদন সংস্থাকে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে গত মঙ্গলবার এবং বুধবার পক্ষে বিপক্ষে আন্দোলন-প্রচারের পরে, এ দিন বৃহস্পতিবার এমনই ইঙ্গিত মিলেছে।
কলাকেন্দ্র নিয়ে জলপাইগুড়ির বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা চিন্তাভাবনা করছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান গৌতম দেব। মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে প্রতিবাদ শুরু করা জলপাইগুড়ি কলাকেন্দ্র রক্ষা মঞ্চের সদস্যরাও। পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব মিটে যাওয়ার পরে জলপাইগুড়িতে এসে মঞ্চের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করতে পারেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। অন্যদিকে, কলকাতার স্টার থিয়েটারের দায়িত্বে থাকা পেশাদারি বিনোদন সংস্থার হাতে দায়িত্ব গেলে কলাকেন্দ্রের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং ভাল সিনেমা-সংস্কৃতি দেখার সুযোগ হবে হবে বলে সামাজিক বন্ধুত্বের সাইট ‘ফেসবুকে’ গ্রুপ তৈরি করে বেসরকারিকরণের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন এক দল শহরবাসী। তাঁরাও কলাকেন্দ্র নিয়ে আলোচনা বা বৈঠক হলে সেখানে থাকার দাবি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “কোনও পদক্ষেপই কাউকে না জানিয়ে গ্রহণ করার পক্ষপাতি আমি নই। কলাকেন্দ্র নিয়েও জলপাইগুড়ির কিছু বিশিষ্টজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। শহরের আরও কিছু বিশিষ্টজনেরা মঞ্চ তৈরি করে প্রতিবাদ করছেন। আমি মঞ্চের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনায় বসার কথা ভাবছি। আপাতত পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য আলোচনা হয়ত হবে না ভোট মিটে যাওয়ার পরে আলোচনা হতেই পারে। যে কোনও ভাল সিদ্ধান্ততো সকলে মিলেই হয়।” আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে কলাকেন্দ্র রক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক গৌতম গুহ রায় বলেন, “অবশ্যই আলোচনায় আমরা রাজি। মন্ত্রী নিজে আলোচনায় বসতে চাইছেন শুনে আমরা আনন্দিত। আগামী শনিবার নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। যে কোনও সমস্যার সমাধানতো আলোচনাতেই হয়। তবে কলাকেন্দ্রকে বেসরকারি হাতে না দেওয়াতেই আমরা বিশ্বাস রাখি। দেখাই যাক না আলোচনায় কী হয়।”
অনিয়মিত অনুষ্ঠানে কলাকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ যোগাড় করা সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে বলে এসজেডিএ সূত্রে জানানো হয়েছে। সে কারণেই বেসরকারি হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। তবে কলাকেন্দ্রে সিনেমা দেখানো নতুন কোনও বিষয় নয় বলে এসজেডিএ জানিয়েছে। কলাকেন্দ্রের মূল পরিকল্পনাতেই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সিনেমা দেখানোর কথা উল্লেখ্য রয়েছে। যদিও বিগত দিনে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয় নি। বর্তমানে এসজেডিএ চাইছে বেসরকারি সংস্থাকে কলাকেন্দ্রের দায়িত্ব দিয়ে মূল পরিকল্পনাটি রূপায়িত হোক। অন্যদিকে প্রতিবাদী মঞ্চের দাবি, সরকারি তত্বাবধানেই এই কাজ হোক।
কলাকেন্দ্রের বেসরকারিকরণকে স্বাগত জানিয়ে বুধবার দুপুরে ‘ফেসবুকে’ একটি গ্রুপ তৈরি করে প্রচার শুরু করেণ একদল শহরবাসী। এ দিন দুপুরে এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ১২৫ ছাড়িয়ে গিয়েছে। গ্রপের অন্যতম সদস্য নির্মাল্য চক্রবর্তী বলেন, “সরকারি হাতে থাকলে কলাকেন্দ্রেকে কী কোনও বুদ্ধিদীপ্ত ছবি যাতে, রাষ্ট্রকে সামান্য খোঁচা রয়েছে সেগুলি দেখানো সম্ভব হবে। এটাও ভেবে দেখা দরকার। কলাকেন্দ্র নিয়ে আলোচনায় আমরাও সামিল হতে চাই। আমাদের যুক্তিও তো শোনা দরকার।”
|