|
|
|
|
আনন্দবাজারে খবরের জের |
শবর পরিবারগুলিকে পাট্টা জমি ‘বুঝিয়ে’ দিল প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
বেলপাহাড়ির রিমড়াডাঙা গ্রামের ৮টি শবর পরিবারের পাট্টা পাওয়া জমির সীমানা নির্ধারণ করে চিহ্নিত করে দিল ভূমি সংস্কার দফতর।
বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) অরিন্দম দত্তের নির্দেশে ঝাড়গ্রাম মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক তপন মান্না এবং বেলপাহাড়ি ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক তুষারকান্তি শতপথী রিমড়াডাঙায় যান। রিমড়াডাঙা মৌজায় ৮টি শবর পরিবারের জন্য বরাদ্দ জমি চিহ্নিত করে দেন ভূমি দফতরের কর্মীরা। স্থানীয় সূত্রের খবর, শবর পরিবারগুলিকে ভূমি দফতরের লোকজন বলেন, “আগে তোমাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা সত্ত্বেও তোমরা কেন সংবাদমাধ্যমকে বলেছ, জমি চিহ্নিত করে দেওয়া হয়নি?” এরপর শবর পরিবারগুলির সদস্যদের রিমড়াডাঙা মৌজায় পাট্টা পাওয়া ৪০ ডেসিমেল খাসজমিটির কাছে নিয়ে গিয়ে প্রত্যেক পরিবারকে ৫ ডেসিমেল করে জমি চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। ৮টি শবর পরিবার পাট্টা পাওয়া জমির এলাকা বুঝে নিয়েছেন, এই মর্মে লিখিত স্বীকারোক্তি-পত্রে তাঁদের টিপ সই নেওয়া হয়।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) অরিন্দম দত্ত বলেন, “শবর পরিবারগুলিকে আগে একবার মাপজোক করে জমির সীমানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সহজ সরল শবরেরা জমির সীমানা ভুলে গিয়েছিলেন। তাই বুধবার দ্বিতীয় দফায় তাঁদের জমির সীমানা বুঝিয়ে দেওয়া হল। ওই ৮টি পরিবারকে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে। ভোট প্রক্রিয়া চলায় বাড়ি তৈরি করা যায়নি। ভোট-পর্ব মিটলেই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হবে। শবরদের সহায়ক জীবিকার ব্যবস্থাও করা হবে।’’
গত বছর অগস্টে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেলপাহাড়িতে প্রশাসনিক জনসভা করতে এসেছিলেন। সভামঞ্চে রিমড়াডাঙার ৮টি শবর পরিবারের হাতে ‘নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্পে’ জমির পাট্টার কাগজ তুলে দিয়েছিলেন মমতা। তারপর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘নিজ গৃহ নিজ ভূমি’ প্রকল্পে সেখানে সরকারি খরচে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। বাসিন্দাদের জীবনজীবিকার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও ‘চিহ্নিত’ জমিতে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়নি। শবরদের জীবিকার ব্যবস্থাও হয়নি। বুধবার আনন্দবাজার পত্রিকায় সেই খবর প্রকাশিত হতেই প্রশাসনের অস্বস্তি বাড়ে। কারণ, বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে ছিলেন। তড়িঘড়ি ভূমি দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা রিমড়াডাঙায় ছুটে যান। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক ফোনে উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, “শবরদের জমি চিহ্নিত করা আছে। ওরা সেটা জানে। তবে বাড়ি তৈরির কাজ এখনও হয়নি। আপানারা প্রকৃত তথ্য না-জেনে ভুল খবর করেছেন।”
আগে ব্লক প্রশাসন জানিয়েছিল, শবর পরিবার পিছু বাড়ি তৈরি করার জন্য ৪৮,৫০০ টাকা দেওয়া হবে। প্রাপকরা নিজেরা বাড়ি বানাবেন। কয়েকজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকাও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না খোলায় টাকা পাঠানো যায়নি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) অরিন্দম দত্ত অবশ্য বলেন, “প্রশাসনের তরফে ঠিকাদার নিয়োগ করে শবরদের বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিটি বাড়ি তৈরি করতে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা খরচ হবে। টেন্ডার আগেই হয়ে গিয়েছে। ভোট প্রক্রিয়া চলায় কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া যায়নি।”
|
পুরনো খবর: পাট্টা দিয়েছিলেন মমতা, তবু জমির হদিস পাননি শবররা |
|
|
|
|
|