এ যেন মহামারি। বুধবার সারা দিন অল ইংল্যান্ড ক্লাব জুড়ে শুধু এই গুঞ্জন।
উইম্বলডনের প্রথম তিন দিনের মধ্যেই রাফায়েল নাদাল, রজার ফেডেরার, মারিয়া শারাপোভারা ছিটকে গেল! নাদালের নয় চোট ছিল, কিন্তু ফেডেরার? ঘর-বাড়ি বানিয়ে ফেলা সেন্টার কোর্টে এ ভাবে হারবে কেউ ভাবতে পেরেছিল?
ম্যাচটা যাঁরা দেখেছেন তাঁরা অবশ্য বলবেন এটা হওয়ারই ছিল। আমি তাঁদের সঙ্গে একমত। এই ফেডেরার আমার অচেনা। সার্ভ, রিটার্ন কিছুই দেখে ফেডেরারসুলভ বলে মনে হয়নি। বয়েসের থাবায় রিফ্লেক্স কমে যাওয়ার ব্যাপারটা তো রয়েছেই। গোটা ম্যাচে সেই বিখ্যাত দাপটই বা কোথায়! ফেডেরার হারল ৭-৬, ৬-৭, ৫-৭, ৬-৭। |
অনেকে বলবেন উইম্বলডন কর্তাদের ফতোয়ায় জুতো বদলে নামার জন্য হয়তো কোর্টের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে সমস্যা হয়েছে ফেডেরারের। আমার কিন্তু তা মনে হয় না। আসলে দিনটা ফেডেরারের নয়, ইউক্রেনের ছেলেটারই ছিল। সের্জেই স্টাকভস্কি। মাথা ঠান্ডা রেখে কী দুর্দান্ত খেলল ছেলেটা। সার্ভ, ভলি, নেট সবকিছুতেই ফেডেরারকে ধারে-কাছে আসতে দেয়নি। ২০০২-এর পর এই প্রথম উইম্বলডনে কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই বিদায় নিল ফেডেরার। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওর রিফ্লেক্স যে ভাবে কমছে, তাতে ১৮ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতাটা দূরঅস্ত মনে হচ্ছে। এমনকী উইম্বলডনেও ওর চেনা খেলা আর দেখতে পাব কিনা, সন্দেহ। এ দিন সত্যিই অঘটনেরই ছিল। স্টিভ দারসিসের কাঁধে চোটের জন্য টুর্নামেন্ট থেকে সরে যাওয়ার খবরটা সকালে অল ইংল্যান্ড ক্লাবে ঢুকতে ঢুকতেই পেলাম। নাদালকে সে দিন কি ভাবেই না হারাল ছেলেটা। অথচ দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে নামতেই পারবে না! অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। ক্যারোলিন ওজনিয়াকি, অ্যানা ইভানোভিচরা তো চোটের জন্যই ঠিকমতো খেলতে না পেরে হার মানতে বাধ্য হল। শারাপোভাও শুনলাম ম্যাচের মাঝখানে ফিজিওকে নিয়ে অনেকটা সময়ই কাটাল। সানিয়াদের ডাবলস ম্যাচটা দেখতে দেখতে এই কথাগুলোই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। |
অঘটনের শিকার |
হেরে বিদায় |
• ফেডেরার • শারাপোভা • হিউইট
•ওজনিয়াকি • ইভানোভিচ |
চোটে বিদায় |
|
|
|
দারসিস, আজারেঙ্কা ও মারিন চিলিচ |
|
এবং
• সঙ্গা • ইসনার • স্টেপানেক |
|
ওজনিয়াকি না কি প্রেস কনফারেন্সে এসে সরাসরি কোর্টকেই দায়ী করেছে। আমি কিন্তু একমত হতে পারছি না। আসলে ঘাসকোর্টে নেমেই সঙ্গে সঙ্গে দারুণ খেলাটা মোটেই সোজা কাজ নয়। এমনিতেই ঘাসের কোর্টে বলের গতি কমে যায়। তাই প্লেয়ারদের নিজেদের মুভ করাতে রীতিমতো মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়। তাও তো এখনকার প্লেয়াররা ঘাসের কোর্টের জন্য তৈরি বিশেষ জুতো পরে নামে। আমাদের সময় তো এ সব কিছুই ছিল না। এত খারাপের মধ্যে অবশ্য মহেশ, সানিয়া আর বোপান্নাদের জেতাটা মরুদ্যানের মতো। দিনের শেষে এটাই শান্তি দিল। |