পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারের সময়ে গোলমালের ঘটনা অব্যাহত কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে। সোমবার রাতে কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে ফরওয়ার্ড ব্লকের বিদায়ী প্রধান সুবল মোদকের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আরও দুই কর্মীর বাড়িতে খড়ের গাঁদায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার পথে ফরওয়ার্ড ব্লকের জোনাল কমিটির সম্পাদক বিশ্বনাথ দে আমিনকে মারধরের অভিযোগও রয়েছে। পাল্টা অভিযোগে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার পথে ভেটাগুড়িতেই মন্তেশ্বর বর্মন নামে এক তৃণমূল কর্মীকে মারধর করে ফরওয়ার্ড ব্লক। মন্তেশ্বরবাবুকে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পাশাপাশি, কোচবিহারের মহিষবাথানে তৃণমূলের পতাকা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “বেশ কয়েকটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। প্রত্যেকটি ঘটনাই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
সম্প্রতি বাসন্তীরহাটের খট্টিমারিতে এক তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তেতে রয়েছে দিনহাটা মহকুমায়। দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহের বিরুদ্ধেও খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। এই অবস্থায়, সোমবার রাতে তৃণমূল ও ফরওয়ার্ড ব্লক দুই দলই ভেটাগুড়িতে ভোটের প্রচার শুরু করে। তারা ভেটাগুড়ি বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় সভা মিছিল করে।
ফরওয়ার্ড ব্লকের অভিযোগ, সাড়ে দশটা নাগাদ তৃণমূল মিছিল নিয়ে ভেটাগুড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান সুবলবাবুর বাড়িতে হামলা চালায়। ধারাল অস্ত্র দিয়ে ঘরের বেড়া, টিন কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাশেই থাকা সুবলবাবুর ভাই জগবন্ধুবাবুর খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাশের আরেকটি খড়ের গাদাতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানা গিয়েছে। ওই সময়ে বিশ্বনাথবাবু প্রচার সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। কাশীগঞ্জ-ঘাটপাড়া এলাকায় তাঁকে আটকে তৃণমূল কর্মীরা মারধর করে বলে অভিযোগ। ফরওয়ার্ড ব্লকের জোনাল কমিটির সম্পাদক বিশ্বনাথবাবু বলেন, “এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে ভোটে জিততে চাইছে তৃণমূল। এ জন্য একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি পুলিশে জানানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ বাড়িতে থাকতে ভয় পাচ্ছেন।” |
তৃণমূলের দিনহাটার নেতা অসীম নন্দী পাল্টা দাবি করে বলেন, “ওই দিন রাতে প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার পথে দলের কর্মী মন্তেশ্বর বর্মনকে আক্রমণ করা হয়। তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পরে নিজেদের বাড়ি নিজেরাই ভাঙচুর করেছে ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মীরা। অভিযোগ তুলে সত্য গোপন করা যায় না। মানুষ সব দেখছে আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।”
এদিকে, সিপিএম সমর্থক এক দম্পতিকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গত রবিবার রাতে ধূপগুড়ি ব্লকের ঝাড়আলতা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গারকুট্টা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ। সোমবার এলাকার ৪ তৃণমূল সমর্থকের বিরুদ্ধে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সেদিনই এলাকার ৩ সিপিএম কর্মীর বিরুদ্ধেও তৃণমূলের পতাকা ছেঁড়া ও গালিগালাজ করার পাল্টা অভিযোগও দায়ের হয়েছে। ধূপগুড়ি থানার আই সি যুগল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।”
|