|
|
|
|
ক্ষতিপূরণের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন |
প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরাই বঞ্চিত, ক্ষুব্ধ চাষিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল কৃষি দফতরকে। সোমবার নারায়ণগড় ব্লকে অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণ বিলি চলছিল। কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ব্লকের ৩৪৪ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চেক বিলির সমস্য অনেকে এসে অভিযোগ করতে থাকেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাননি। অথচ, এমন অনেকে চেক পাচ্ছেন যাঁদের ক্ষতি হয়নি। কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর নিমাইচন্দ্র রায় অবশ্য বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগ না করলে তো কিছু করা যাবে না। অভিযোগ পেলে পদক্ষেপ করা হবে।”
কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ৬টি ব্লকে অতি বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি হয়েছিল। ব্লকগুলি হল মেদিনীপুর সদর, কেশপুর, গড়বেতা-২, দাসপুর-১, নারায়ণগড় ও ডেবরা। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে গড়বেতা-২ ব্লকে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষির সংখ্যা ৫৭৫৪ জন। সর্বনিম্ন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা। সাড়ে ৭ বিঘে বা তার বেশি ক্ষতি হলে সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ। সঙ্গে ১২ কেজি চালও। মেদিনীপুর সদর ব্লকের ১৩৩২ জনের মধ্যে ১২৩৩ জনকে চেক দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দাসপুরে ১৪১৫ জনের মধ্যে ৯৪৬ জনকে চেক দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এ দিন নারায়ণগড়ে ৩৪৪ জনের মধ্যে ২৭৫ জন চেক নেন। বিক্ষোভ শুরুর আগেই ওই চেকগুলি দেওয়া হয়।
চেক দেওয়া শুরু হতেই বেধেছে বিতর্ক। দাঁতন-১ ব্লকের চাষিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করছেন। ক্ষতিপূরণের দাবিও তুলেছেন। তা ছাড়া, ভুয়ো চাষির নামও তালিকায় ঢুকেছে বলে অভিযোগ। কেউ বা ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে দেখিয়েছেন। হয়তো ১ বিঘে জমি রয়েছে। অথচ ৩ বিঘের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “এই তালিকা কতটা সঠিক, তা নিয়ে আমাদেরও সংশয় রয়েছে। তাই প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত চাষিকে জমির দলিল দেখাতে বলা হয়েছে। তবেই ক্ষতিপূরণ মিলবে।”
কিন্তু এই ভুলে ভরা তালিকা তৈরি হল কী করে? কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে তড়িঘড়ি তালিকা বানিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ এসেছিল রাজ্য থেকে। তা করতে গিয়ে আবেদনকারীদের দাবি খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। সব ব্লকে চূড়ান্ত তালিকাও তৈরি করা যায়নি। এ নিয়ে জেলা স্তরের বৈঠকে বিতর্কও হয়। তা সত্ত্বেও রাজ্যের চাপে পরিদর্শন ছাড়াই ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করতে হয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যদি নতুন কেউ ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন জানান বা অভিযোগ করেন, সব রাজ্যের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্যই সিদ্ধান্ত নেবে। |
|
|
|
|
|