রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে জোড়া পদক
অভাবের সঙ্গে লড়েই সোনার মেয়ে রূপসী
রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে জোড়া পদক পেয়ে জেলার মুখ উজ্জ্বল করল রূপসী খাতুন। প্রতিভাবান এই অ্যাথলিটের মধ্যে ভবিষ্যতের সুস্মিতা সিংহ রায়কে দেখতে পাচ্ছেন অনেকে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাথলেটিক্স সাব-কমিটির আহ্বায়ক স্বদেশরঞ্জন পান বলেন, “ওকে নিয়ে আমাদের অনেক আশা। সুস্মিতাও তো মেদিনীপুরের মেয়ে। আমাদের সকলের গর্ব। রূপসীর মধ্যেও বড় হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। মাঝেমধ্যেই সুস্মিতার কথা বলে। আমি বলেছি, নিজের ইচ্ছে থাকলে কিছুই বাধা হতে পারে না। সাফল্য আসবেই।” ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের শারীরশিক্ষা বিভাগের শিক্ষক স্বদেশবাবুই রূপসীর প্রশিক্ষক।
রূপসীও বলছে, “আমি আরও ভাল পারফরম্যান্স করতে চাই। শিক্ষকেরা নানা ভাবে সাহায্য করেন। না হলে হয়তো মাঠে নামতেই পারতাম না।” এ বার সাইতে গিয়ে সুস্মিতাকে দেখেছেন। তবে দূর থেকে। কথা বলার সুযোগ হয়নি। রূপসী বলছিল, “পরের বার দেখা হলে কথা বলব। সুস্মিতাদিই আমার অনুপ্রেরণা।” রূপসীর বাড়ি চন্দ্রকোনার নেকড়বাগে। তাতারপুর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সে। স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মাঠে নামলেই পুরস্কার জেতে। সেই সুবাদে নজরে পড়া। স্কুলের শিক্ষক অরূপ মণ্ডলই তাকে স্বদেশবাবুর কাছে নিয়ে আসেন। মেদিনীপুরে অ্যাথলিট কোচিং ক্যাম্প রয়েছে স্বদেশবাবুর। সেখানেই তালিম নেয় রূপসী। বাবা শেখ সামসের আলি চাষবাস করেন। সামান্য আয়। মা ফতেমা বেগম গৃহবধূ। সামসেরের চার মেয়ে, এক ছেলে। চার মেয়ের মধ্যে রূপসীই ছোট। দারিদ্রের মধ্যেই তার বেড়ে ওঠা।
পদক হাতে রুপসী খাতুন। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
শুধু রূপসীর জোড়া পদক নয়, রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে সব মিলিয়ে ১০টি পদক পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। ৫টি সোনা, ৩টি রুপো, ২টি ব্রোঞ্জ। অনুর্ধ্ব ১৪ বিভাগে হাইজাম্পে সোনা পেয়েছে রূপসী। সঙ্গে ট্রায়াথোলানে তার প্রাপ্তি ব্রোঞ্জ। অনুর্ধ্ব ২০ বিভাগে জ্যাভলিন থ্রো এবং ৪০০ মিটার দৌড়ে সোনা পেয়েছে জেলার আভা খাটুয়া। অনুর্ধ্ব ২০ বিভাগে ৫ হাজার এবং ১০ হাজার মিটার দৌড়ে সোনা পেয়েছে সৌম্যদীপ মণ্ডল। চম্পা বেরা জাভলিন থ্রোয়ে ব্রোঞ্জ, তুষ্ট মাহাতো ৬০০ মিটার দৌড়ে রুপো, বিশ্বজিৎ দাস হাইজাম্পে রুপো এবং বীরেশ্বর সাহা শটপুটে রুপো পেয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতার সাইতে শুরু হয় ৬৩ তম রাজ্য অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ (সিনিয়র এবং জুনিয়র)। শেষ হয় রবিবার। জেলার ৩২ জন প্রতিযোগীর সঙ্গে কলকাতায় গিয়েছিলেন জেলা দলের ম্যানেজার লক্ষ্মীকান্ত দাস এবং কোচ ইতি বর্মণ। জেলার খুদে অ্যাথলিটদের সাফল্যে খুশি লক্ষ্মীকান্তবাবু, ইতিদেবী। জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য বিদ্যুৎ বসু বলছিলেন, “ এখানে প্রতিভার অভাব নেই। শুধু প্রশিক্ষণ দরকার। আমরা নিশ্চিত, খুদে অ্যাথলিটরা ভাল প্রশিক্ষণ পেলে আগামী দিনে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় আরও ভাল পারফরম্যান্স করবে।”
রবিবার রাতেই মেদিনীপুরে ফিরেছে রূপসী। সোমবার সকালে মেদিনীপুর অরবিন্দ স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস করতে দেখা গেল তাকে। প্র্যাকটিস শেষে ছাত্রীকে চন্দ্রকোনার বাসে তুলে দিলেন স্বদেশবাবু। আজ, মঙ্গলবার সবেবরাত। রূপসীর মন অবশ্য মাঠেই পড়ে। সে বলছিল, “সবেবরাতের জন্য বাড়ি যাচ্ছি। ক’দিন থেকে ফিরব। পরের বার রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে আরও ভাল পারফরম্যান্সের চেষ্টা করব।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.