ডোমজুড়ের পার্বতীপুর
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাতে হিমশিম শাসক দল
০০৩ সাল থেকে ডোমজুড়ের পার্বতীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম এখানে একটিও আসন পায়নি। ১০টি আসনের সব ক’টিতেই জয়ী তৃণমূল। তা সত্ত্বেও নিজেদের ঘরোয়া কোন্দলের জেরে এ বছর জেরবার তৃণমূল। এ বছর পঞ্চায়েতে আসন বেড়ে হয়েছে ১১। তার মধ্যে ৪টিতে প্রার্থী দিয়েছে এলাকার বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের সংগঠন ‘পার্বতীপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস বাঁচাও কমিটি।’ পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনেও প্রার্থী দিয়েছে তারা। কমিটির বাইরে থেকে নির্দল হিসেবে ভোটে লড়ছেন গত দু’বারের তৃণমূলের টিকিটে জেতা পঞ্চায়েত সদস্য নিমাই ভট্টাচার্য।
এত জন নির্দল প্রার্থী থাকায় দল বিপাকে পড়বে বুঝতে পেরেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সম্প্রতি বিবাদমান গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন তাঁরা। সিদ্ধান্ত হয়, লড়াই থেকে সরে দাঁড়াবেন ‘তৃণমূল বাঁচাও কমিটি’র পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী চাঁদু দত্ত ও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী লাল্টু মণ্ডল। মুছে দেওয়া হবে তাঁদের সমর্থনে লেখা দেওয়াল। সরিয়ে নেওয়া হবে ব্যানার। যদিও রবিবার দুপুর পর্যন্ত পার্বতীপুরের পাড়ায় পাড়ায় ‘তৃণমূল বাঁচাও কমিটি’র দেওয়াল লিখন-ব্যানার চোখে পড়েছে। সমস্যা রয়েছে আরও। লড়াইয়ে থেকে গিয়েছেন ‘তৃণমূল বাঁচাও কমিটি’র তিন পঞ্চায়েত প্রার্থী মোহন সামন্ত, অভয় মণ্ডল ও জয়দেব চৌধুরী। লড়াইয়ে রয়েছেন নির্দল প্রার্থী নিমাইবাবুও।
ডোমজুড় এলাকায় দলের খাসতালুকে কেন এ রকম হল? কী বলছেন তৃণমূল নেতারা?
দলের অন্দরের খবর, সমস্যার শুরু পার্বতীপুর পঞ্চায়েতের একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বিদায়ী উপপ্রধান সুবীর চট্টোপাধ্যায়ের টিকিট পাওয়ার পরে। ওই আসনের অন্যতম দাবিদার চাঁদু দত্ত এরপরেই বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে ‘তৃণমূল বাঁচাও কমিটি’ তৈরি করেন। সুবীরবাবু অবশ্য বলেন, “দলের কিছু কর্মী ভুল পথে পরিচালিত হয়েছিলেন। আমরা এক সঙ্গে বসে সমস্যা মিটিয়ে নিয়েছি। এখন সকলে এক সঙ্গেই প্রচার করছেন।” স্থানীয় বিধায়ক আবুল কাশেম মোল্লার দাবি, “আলোচনার মধ্যে দিয়ে সমস্যা মিটে গিয়েছে। নির্দল প্রার্থীরা লিফলেট বিলি করে জানিয়ে দেবেন তাঁরা লড়াই করছেন না।” নির্বাচনের আগে সমস্যা মিটে যাবে বলে দাবি করেছেন হাওড়া জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তথা স্থানীয় বাসিন্দা অনুপম ঘোষও।
লড়াই থেকে সরে দাঁড়ালেও ক্ষোভ যায়নি ‘তৃণমূল বাঁচাও কমিটি’র চাঁদু দত্তের। তিনি বলেন, “এলাকায় দল যাঁদের প্রার্থী করেছে, তাঁদের পছন্দ হয়নি। দল আমাদের যোগ্য সম্মানও দেয়নি। তাই প্রার্থী হয়েছিলাম। কিন্তু এর ফলে সুবিধা পাবে সিপিএম। যেটা হতে দেওয়া যায় না। তাই ক্ষোভ মনে রেখেই লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।”
চাঁদুবাবু সরে এলেও লড়াই থেকে সরতে নারাজ মোহন সামন্ত, অভয় মণ্ডলেরা। মোহনবাবুর কথায়, “এলাকায় লড়াই করে তৃণমূলের সংগঠন করেছি। কিন্তু দলে এখন আমাদের কথা শোনা হয় না। এর প্রতিবাদ করতেই প্রার্থী হয়েছি।” অভয়বাবুর কথায়, “তৃণমূল সমর্থক ছিলাম। কিন্তু এখন দলের কাজে মনে হচ্ছে এর থেকে সিপিএম ভাল ছিল।” নির্দল প্রার্থী নিমাই ভট্টাচার্য বলেন, “আমি ২০০৩ ও ২০০৮ সালে তৃণমূলের হয়ে লড়ে জিতেছি। কিন্তু এ বছর দল আমাকে প্রার্থী করনি। কিন্তু এলাকার মানুষ চান আমি প্রার্থী হই। তাই হয়েছি।”
তৃণমূলের গোষ্ঠী-লড়াই ব্যালট পেপারে চলে আসায় সিপিএম আশার আলো দেখছে। দলের ডোমজুড় জোনাল কমিটির সম্পাদক অংশুমান আঁশ বলেন, “ওই এলাকায় ২০০৩ এর আগে পঞ্চায়েতে আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। মানুষের তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আছে। তার উপর তৃণমূল এ বছর ঐক্যবদ্ধ নয়। কংগ্রেস, বিজেপির প্রার্থীও রয়েছেন। আশা করি আমাদের ফল হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.