প্রয়াত প্রাক্তন ক্রিকেটার পঙ্কজ রায়ের কুমোরটুলির বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকার গয়না চুরির অভিযোগ উঠল। রবিবার পঙ্কজবাবুর পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁদের ৮ নম্বর অভয় মিত্র রোডের বাড়ির সিন্দুক থেকে ওই গয়নাগুলি খোয়া গিয়েছে। তবে কবে চুরি হয়েছে, তা অবশ্য তাঁরা জানাতে পারেননি।
পুলিশ জানিয়েছে, চারতলা ওই বাড়িটির তিনতলায় দু’টি ঘর নিয়ে থাকেন পঙ্কজ রায়ের স্ত্রী বিজয়া রায়। ওই দু’টি ঘরের একটিতেই সিন্দুকটি থাকে। ১৩৫ বছরের পুরনো ওই বাড়িতে বিজয়াদেবী ছাড়াও থাকেন তিন জন পরিচারিকা, যাঁরা ৮৪ বছরের বিজয়াদেবীকে দেখভাল করেন। তবে তাঁরা দিনের বেলা উপরে বিজয়াদেবীর কাছে থাকলেও, রাতে একতলায় থাকেন। পরিবার সূত্রের খবর, বাড়িটিতে মোট ৩০টি ঘর। বিজয়াদেবী দু’টি ঘরে থাকলেও, বাকি ২৮টি ঘর খালিই থাকে। ১৩৫ বছরের পুরনো বাড়িটির যে সিন্দুক থেকে গয়নাগুলি চুরি গিয়েছে, সেই সিন্দুকটিরই বয়স ৫০ বছরের উপরে। |
পঙ্কজবাবুর পরিবার সূত্রের খবর, সিন্দুকটিতে বংশের বহু মূল্যবান গয়না ছিল। এ ছাড়াও ছিল প্রচুর দলিলপত্র, দরকারি কাগজ-সহ ৫০ হাজারের মতো টাকা। রবিবার পরিবারের লোকেরা দেখেন, অনেক গয়নাই নেই। তবে কাগজপত্র এবং টাকা যা ছিল, তাতে কেউ হাত দেয়নি। পুলিশ সূত্রের খবর, দশ দিন আগে বিজয়াদেবী এবং তাঁর ছোট ছেলে প্রদীপ রায় সিন্দুকটি খুলেছিলেন। তার পরে সেটি আর খোলা হয়নি। রবিবার ফের সিন্দুক খুলে তাঁরা দেখেন, অনেক মূল্যবান গয়না উধাও। সঙ্গে সঙ্গে বিজয়াদেবীর মেজ ছেলে প্রণববাবু অভিযোগ দায়ের করেন শ্যামপুকুর থানায়। আসেন লালবাজারের গোয়েন্দারাও।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রের খবর, সিন্দুকটিতে ‘কম্বিনেশন লক’ রয়েছে। মূলত ৩টি চাবি এবং ৩টি নম্বর দিয়ে সিন্দুকটি খোলা যায়। প্রথমে একটি চাবি ঘুরিয়ে একটি নম্বর দিয়ে একটি ঘাট খোলা যায়। এ ভাবে তিন বার ঘাট ঘোরালে সিন্দুকটি খুলতে পারা যায় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। বিজয়াদেবী ছাড়া তাঁর তিন ছেলে সিন্দুকটি খুলতে পারেন। পরিবারের লোকের কাছে চাবি থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে, কে বা কারা ‘কম্বিনেশন লক’ খুলে গয়না হাতালো, তা নিয়ে ধন্দে খোদ পুলিশকর্তারাই।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পরিচিত কেউ এই চুরির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ সোমবার বলেন, “ওই সিন্দুক অন্য কেউ খুলত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |