বাড়ি আর পিংপং রইল, তোমরা একটু দেখে রেখো
খনও খোঁজ মেলেনি জয়িতা ও রীতা সাহার।
তীর্থযাত্রার আগে বাড়ি আর পোষ্যের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন বাড়ির মালিকেরা। সেই দায়িত্ব-ই এখন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অরিজিৎ মল্লিক ও মিঠু মল্লিকের। তাঁদের উপর বিশাল দোতলা বাড়ির দায়িত্ব যেমন রয়েছে, তেমনই মাথায় ভার করে রয়েছে অপরিচিত থেকে আত্মীয় হয়ে ওঠা বাড়িওয়ালাদের নিখোঁজ সংবাদও। গত ১২ জুন বাগুইআটির রঘুনাথপুরের বাসিন্দা জহর সাহা, স্ত্রী রীতাদেবী ও মেয়ে জয়িতাকে নিয়ে কেদারনাথ রওনা দিয়েছিলেন। সঙ্গে গিয়েছিলেন জয়িতার বন্ধুর মা সংযুক্তা দেব-ও। অরিজিৎ জানান, কেদারনাথে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে উঠেছিলেন জহরবাবুরা।
১৫ তারিখ সন্ধ্যায় কেদারনাথ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর শেষ বার জহরবাবুদের সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। তার পর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই সাহা পরিবারের। অরিজিতের স্ত্রী মিঠু বলেন, “৬ বছর পর মাসিমারা কোথাও ঘুরতে গিয়েছেন। তাই উৎসাহ-আনন্দও ছিল বেশি। যাওয়ার আগে আমাকে বললেন, ‘বাড়িটা আর পিংপং (জহরবাবুদের পোষা খরগোস) রইল। তোমরা দেখো’।”
অরিজিৎ জানান, ১৫ তারিখ ফোনে প্রচণ্ড বৃষ্টি হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন জহরবাবু। ঠিক ছিল, পরের দিনই তাঁরা গৌরীকুণ্ডে নেমে আসবেন। সেই মতো সকাল দশটায় ট্র্যাভেল এজেন্টকে গৌরীকুণ্ডে গাড়ি পাঠাতে বলেছিলেন জহরবাবু। অরিজিৎ জেনেছেন, চালক তাঁর গাড়ি নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু বার বার ফোন করেও জহরবাবুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। পরে যখন গৌরীকুণ্ডে হড়পা বান এলে চালক কোনও মতে পালিয়ে বাঁচেন। তবে গাড়িটি ভেসে যায়। কিন্তু কোথায় গেলেন জহরবাবুরা?
অরিজিৎ জানান, কেদারনাথ থেকে ডুলিতে চেপে গৌরীকুণ্ডে পৌঁছনোর কথা ছিল জহরবাবুর। রীতাদেবীরা ঘোড়ার পিঠে। কিন্তু কেদারনাথ থেকে তাঁরা আদৌ রওনা দিতে পেরেছিলেন কি না, সেটাও পরিষ্কার নয় মল্লিক দম্পতির কাছে। তাই এখন অপেক্ষাটাই তাঁদের কাছে শেষ সম্বল।
তবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জায়গায় খোঁজ নিয়েছেন অরিজিৎ। যোগাযোগ করেছেন উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের সঙ্গে। খবর দিয়েছেন রীতাদেবীর বাপের বাড়িতেও। পাশাপাশি আগলে রয়েছেন জহরবাবুদের বাড়ি। সংযুক্তাদেবীর ছেলে অবশ্য মাকে খুঁজতে ইতিমধ্যেই দেরাদুন পাড়ি দিয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় জহরবাবুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, খবরের চ্যানেলের সামনে ঠায় বসে রয়েছেন মল্লিক দম্পতি। ফোন এলেই দৌড়ে যাচ্ছেন। যদি কোনও খবর মেলে। মিঠুর পায়ে পায়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পিংপং-ও। দোতলায় জহরবাবুদের ঘরদোর খাঁ খাঁ করছে। মিঠু বলছেন, “স্বামীর চাকরি সূত্রে এখানে আসা। সম্পূর্ণ অপরিচিত পরিবারটি কী ভাবে যেন আত্মীয় হয়ে উঠেছিল!” দিনের বেলা সরকারি চাকুরে স্বামী বেরিয়ে গেলে সেই ‘আত্মীয়দের’ই বাড়ি আগলে বসে থাকেন মিঠু। সঙ্গী পিংপং।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.