সরকারি প্রকল্পে স্কুলের ভবন নির্মাণের বরাদ্দ টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত ছিলেন খোদ প্রধান শিক্ষকই। সম্প্রতি তছরুপ হওয়া টাকা ফেরত দিলেন রামপুরহাটের কাষ্ঠগড়া হাইস্কুলের সেই প্রধান শিক্ষক নিত্যগোপাল মণ্ডল। সর্ব শিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক অনিন্দ্য মণ্ডল বলেন, “স্কুল পরিচালন কমিটির অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করা হয়েছে। তদন্তে প্রমাণ হয়, ভবন নির্মাণে বেশি খরচ দেখানো হয়েছিল। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষককে ওই অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ২০ জুনের মধ্যে তিনি সেই টাকা ফেরত না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হত।”
জেলা সর্ব শিক্ষা মিশন দফতর সূত্রের খবর, ওই স্কুলের দু’টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য ২০১০-১১ আর্থিক বর্ষে ৬ লক্ষ ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। গত মে মাসে স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি আমজাদ হোসেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সেই টাকা খরচে দুর্নীতির অভিযোগ জমা দেন। তদন্তে দুর্নীতির সত্যতা মেলে বলে জানিয়েছেন অনিন্দ্যবাবু। আমজাদ হোসেনের অভিযোগ, “খরচ না হওয়া টাকা ফেরত দেওয়া জন্য পরিচালন সমিতি বিভিন্ন সময়ে নিত্যবাবুকে জানালেও তিনি তা ফেরত দিচ্ছিলেন না। তাই অভিযোগ জানাতে বাধ্য হই।” স্কুলের মিড-ডে মিল-সহ আরও কিছু ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক লক্ষাধিক টাকা দুর্নীতি করেছেন বলে পরিচালন সমিতির অভিযোগ। পরিচালন সমিতির সদস্য জয়দেব পাল বলেন, “তারও তদন্ত চলছে। খুব শীঘ্রই রিপোর্ট বের হবে।”
ঘটনা হল ওই পরিচালন সমিতি শাসকদলের দখলে আছে। দুর্নীতিতে দোষী প্রমাণিত হওয়া (অনিন্দ্যবাবুর দাবি অনুযায়ী) সেই প্রধান শিক্ষককে আবার ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে প্রার্থী করেছে তৃণমূলই। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, শাসকদলের প্রার্থী হয়ে ওই প্রধান শিক্ষক আসলে নিজের দুর্নীতিকেই আড়াল করতে চাইছেন। যদিও নিত্যবাবুর দাবি, “আমি কোনও আর্থিক তছরুপের সঙ্গে যুক্ত নই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে শো-কজ করে ওই পরিমাণ টাকা ফেরত দিতে বলেছিলেন। সেই নির্দেশ পেয়ে টাকা ফেরত দিয়েছি।” দুর্নীতি যদি না-ই হয়ে থাকে, তাহলে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন পড়ল কেন? তার অবশ্য সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। |