গ্রেফতারি এড়াতে আত্মগোপন করার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের সিপিএমের জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী, প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। ২৩ সেপ্টেম্বর গঙ্গারামপুরে পুলিশের দায়ের করা মামলায় ফেরার ওই দুই নেতাকে মোবাইলেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে দলীয় নেতা, কর্মীরাই জানিয়েছেন। এতে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে সমস্যায় পড়েছেন দলীয় প্রার্থী থেকে শুরু করে নেতারা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বালুরঘাটে আছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মানব মুখোপাধ্যায়। ৩০ জুন আসছেন দলের রাজ্য সম্পাদক বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে বালুরঘাট আসছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও। গত দু’দিন ধরে বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুরে গিয়ে কর্মীদের মনোবল ফেরাতে মানববাবু সভা, বৈঠক, প্রচার চালাচ্ছেন। প্রাক্তন মন্ত্রী মানববাবুর অভিযোগ, “নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত জেলার মূল নেতাদের বিচ্ছিন্ন করে কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিতে চক্রান্ত হয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করব। ওই দুই নেতা আছেন। যথাসময়ে প্রকাশ্যে এসে সব বলবেন।”
গত শুক্রবার দুপুরে গঙ্গারামপুর পার্টি অফিসে ঢুকে পুলিশ পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল বসাক, জোনাল সম্পাদক বলরাম ঘোষ এবং জেলা কমিটির সদস্য অচিন্ত্য চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে। আজ, সোমবার বুনিয়াদপুরে মহকুমা আদালতে ধৃত ৩ সিপিএম নেতার জামিনের শুনানি হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, গতবছর ২৩ সেপ্টেম্বর গঙ্গারামপুরের দমদমা কৃষি সমবায়ের ভোটের দিন দলের নেতা অচিন্ত্য চক্রবর্তীর উপর তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের সশস্ত্র হামলা ও গুরুতর জখমের অভিযোগ তুলে সিপিএম পথ অবরোধ করে। সে সময় পুলিশকর্মীরা গিয়ে অবরোধ তুলতে গেলে বিক্ষোভকারীরা ঢিল ছোড়ে বলে অভিযোগ। এক পুলিশকর্মী জখম হন।
মানবেশবাবুদের আত্মসমর্পণ করানোর প্রশ্ন নেই বলে সিপিএমের রাজ্য নেতা মানববাবু দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “পুলিশ মিথ্যা মামলা সাজিয়ে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে ফেরার ঘোষণা করেছে। পুলিশ তাঁদের ধরুক। আত্মসমর্পণের প্রশ্ন নেই।”
৩১ মে বালুরঘাটে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বামেদের আইন অমান্য আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণবাবু, জেলা সম্পাদক মানবেশবাবু। পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে বালুরঘাট থানায় নিয়ে গিয়ে পরে ছেড়ে দেয়। তার আগে গত ২ এপ্রিল রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগে বামফ্রন্টগত ভাবে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে মানবেশবাবু, নারায়ণবাবুরা দেখা করে স্মারকলিপি দেন। তাহলে নারায়ণ ও মানবেশবাবুদের কী করে পুলিশ ‘ফেরার’ বলে চিহ্নিত করেছে সেই প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত নেতাদের ধরা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।” |