ভোট দেওয়ার শর্তে পঞ্চাশটি দাবি বাসিন্দাদের
ফি ভোটে প্রতিশ্রুতি দিলেও তার অধিকাংশ কার্যকর হয় না, এই অভিযোগে একজোট হয়ে নিজেরাই ইস্তেহার তৈরি করেছেন উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার বাসিন্দারা। তাই নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে ৫০টি দাবি সম্বলিত ইস্তেহার তৈরি করা হয়েছে। কমিটির বক্তব্য, যে দলই ক্ষমতাসীন হবে গ্রামের মানুষের স্বার্থে সমস্ত চাহিদা গুলি পূরণ করতে হবে। বাম, কংগ্রেস উভয়পক্ষের জনপ্রতিনিধিরাও বলছেন, এলাকার উন্নয়নের জন্য দাবি পূরণ করবেন তাঁরা। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয় বিধায়কের। নাগরিক কমিটির দাবি মানতে নারাজ বিধায়ক হামিদুল রহমান। তিনি বলেন, “জিতলে নিজেদের মতো উন্নয়ন করব।”
বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, চোপড়ায় কলেজ তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। বিধানসভা নির্বাচন হোক বা লোকসভা নির্বাচন প্রতিটি ভোটের আগেই চোপড়াবাসীদের ভোটের প্রথম প্রতিশ্রুতি থাকে কলেজ তৈরি করা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কলেজ তৈরি হয়নি সেখানে। তাই এবারে পঞ্চায়েত ভোটের আগে কলেজ তৈরির দাবিই প্রথমে জায়গা পেয়েছে নাগরিক কমিটির ইস্তাহারে। উত্তর দিনাজপুর জেলার একটি ব্লক চোপড়া। ব্লক অফিস, থানা, একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৩ টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক মাদ্রাসা মিলিয়ে মোট ১৬ টি স্কুল রয়েছে এই ব্লকে। এই হাতে গোনা কয়েকটি জিনিস ছাড়া আর কিছুই নেই এখানে। তাই এলাকার মানুষদের সুবিধের জন্য নানা দাবি তুলেছেন নাগরিক কমিটি। কমিটির সম্পাদক মুস্তাক আলম বলেন, “চিকিৎসা থেকে পড়াশোনা সবেতেই সমস্যায় পড়তে হয় এলাকার মানুষকে। তাই ভোটের আগে সমস্ত দাবি পূরণ করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। পাঁচ বছরে সব কাজ করতে হবে, না হলে আগামী ভোটে সব কিছুর হিসাব হবে।” কলেজ তৈরি থেকে, স্টেট ব্যাঙ্কের শাখা, স্থায়ীভাবে এলাকায় একটি দমকলের গাড়ি, গ্রামীণ হাসপাতাল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য একটি মুক্তমঞ্চ, পথ বাতি, জমি মাফিয়াদের থেকে সরকারি জমি দখল মুক্ত করার দাবি নিকাশি ব্যবস্থা থেকে হিমঘর ইত্যাদি সহ ৫০ টি দাবি নিয়ে নির্বাচনী ইস্তেহার বানিয়েছে নাগরিক কমিটি। যে দলই ক্ষমতায় আসুক এই দাবি গুলি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিতেই হবে এমনটাই দাবি জানালেন, কমিটির সদস্য রাজীব বসু। তিনি বলেন, “এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আমাদের এই লড়াই চলবে। যে ক্ষমতায় আসবে তাঁদেরকেই এই কাজ করতে হবে।”
এলাকায় তিন লক্ষ ভোটার রয়েছে কিন্তু প্রয়োজনীয় কোন কিছুই নেই এখানে। সামান্য পানীয় জল পরিষেবা টুকু পর্যন্ত নেই এখানে। এই পরিস্থিতিতে নাগরিক কমিটির বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে এই আন্দোলনে খুশি এলাকার বাসিন্দারাও। স্থানীয় বাসিন্দা ভগীরথ হালদার বলেন, “এলাকার উন্নয়ন ও নিজেদের অসুবিধে গুলি নিয়ে যেভাবে কাজ করছে এই কমিটি তাতে আমরা খুশি।” একই কথা বলেন নীরেন দেবনাথ, মজিফুল রহমান সহ অন্যান্যরা। ৫০ টি দাবি নিয়ে তৈরি এই ইস্তেহার এলাকার প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
নাগরিক কমিটির দাবি গুলি মেনে নিয়ে কাজ করতে রাজি এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও। যদিও নাগরিক কমিটির দাবিগুলি নিয়ে একটু অন্যসুর শোনা গেল স্থানীয় বিধায়ক হামিদুল রহমানের কথায়। চোপড়ার কংগ্রেসের ব্লক কমিটির সভাপতি অশোক রায় বলেন, “এখনও নাগরিক কমিটির দাবি সনদ হাতে পাইনি। তবে ওদের কাজে সমর্থন আছে। পাশাপাশি কলেজের যে দাবি রয়েছে তা ক্ষমতায় এলে অবশ্যই করব।” একই কথা বলেন প্রাক্তন মন্ত্রী আনোয়ারুল হক। তিনি বলেন, “নাগরিক কমিটির দাবি তো সমাজের দাবিই হবে। ক্ষমতায় এলে অবশ্যই কাজ গুলি করব।” কংগ্রেস বাম সমর্থন জানালেও বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেন, ‘‘এঁদের দাবির কোনও ঠিক নেই। আমরা নিজেদের মত করে উন্নয়ন করব এলাকায়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.