উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া ব্যারাকপুর
অসহায় বাস
শিয়রে বিপদ
প্লাস্টার খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলে ছাদ থেকে জল পড়ে। মাঝেমধ্যে খসে পড়ে চাঙড়ও। অধিকাংশ দরজা-জানালা ভেঙে পড়েছে। দক্ষিণেশ্বরে পূর্ব রেলের এমন আবাসনে বাধ্য হয়ে বাস করছেন রেলকর্মীদের কয়েকটি পরিবার। অভিযোগ উঠেছে, রেল তাঁদের বাসের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করেনি। হয়নি সংস্কারের ব্যবস্থাও।
দক্ষিণেশ্বরে কামারহাটি পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে রেলের এই আবাসন। অধিকাংশই চার তলা ভবন। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অধিকাংশ ভবনের বেহাল দশা। আশপাশে আগাছা গজিয়েছে। জোরে বৃষ্টি হলে আবাসন চত্বরে জল জমে যায়। যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
তা ছাড়া আবাসনে জল সরবরাহ ব্যবস্থারও ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণও হচ্ছে না বলে অভিযোগ। জলের ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার না করার জন্য হলুদ জল বেরোয়। বাইরে থেকে জল এনে পান করতে হয়।
এই আবাসনে লিলুয়া ওয়ার্কশপের কর্মচারীরা থাকেন। রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব রোড লাগোয়া এই আবাসনের ৮৭, ৮৮, ৮৯, ৯০ ও ৯১ নম্বর (টাইপ-১) ভবনগুলির সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বলে অভিযোগ। ৮৭ নম্বর বিল্ডিংয়ে রয়েছে ২৪টি ফ্ল্যাট। বাকিগুলিতে ১৬টি করে ফ্ল্যাট রয়েছে। এই পাঁচটি ভবনে সব মিলিয়ে ৩০-৪০ জন বাস করেন। স্থানীয় কাউন্সিলর সিপিএমের সুমন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি রেলের। পুরসভা কিছু করতে পারে না। তবে আবাসিকদের স্বার্থে তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে রেলের কাছে অনুরোধ করেছি।” আবাসিকদের অভিযোগ, ৮৭, ৯০ এবং ৯১ নম্বর ভবনগুলি বিপজ্জনক হলেও তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা করেনি রেল। কিন্তু তাঁদের ফ্ল্যাট ছাড়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দার দাবি, “দীর্ঘ দিন ধরে রয়েছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই থাকতে হচ্ছে। মাতৃমন্দির এলাকায় রেলের আবাসন রয়েছে। সেগুলি যথেষ্ট ভাল। আমাদের সেখানে ব্যবস্থা করে দিলে ভাল হয়।” আর এক আবাসিকের কথায়: “বছর কয়েক আগে ফ্ল্যাট ছাড়ার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বেতন থেকে নিয়মিত হাউস রেন্ট কেটে নেওয়া হয়। তাই রেলেরই বিকল্প ব্যবস্থা করার কথা। কিছুই হয়নি। কোথায় যাব?” এই সব অভিযোগ প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবীন মহাপাত্র বলেন, “আবাসিকদের সমস্যা হলে ওঁরা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আবেদন করতে পারেন। আবেদন পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও রেল সূত্রে খবর, ৮৭, ৯০ এবং ৯১ নম্বর ভবনগুলি ভেঙে ফেলা হবে। ৮৮ এবং ৮৯ নম্বর ভবনের মেরামতি হবে। ৮৭, ৯০ এবং ৯১ নম্বর ভবনের আশপাশে ঝুপড়ি থাকার জন্য এগুলি ভাঙতে সমস্যা হচ্ছে বলে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.