উত্তর কলকাতা
বন্ধ নির্মাণ
জলাধার বাঁচাতে
ভূগর্ভস্থ জলাধারের আশপাশে ও উপরের নির্মাণ থেকে ক্ষতি হতে পারে জলধারের কাঠামোর। এমনই আশঙ্কা কলকাতা পুরসভার। তাই এ ধরনের নির্মাণ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে পুরসভা।
পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতায় ১৮টি ভূগর্ভস্থ জলাধার রয়েছে। পুরসভা সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি সমীক্ষাও করেছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে ১০টির উপরে পার্ক রয়েছে। এর মধ্যে সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারের চার পাশেই বেশি নির্মাণ হয়েছে। এখানে নানা ক্লাব, এমনকী, পুরসভার অফিস ও আবাসন রয়েছে। জায়গার অভাব থাকায় এখনও পার্কের তলায় এমন জলাধার তৈরি করতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে উপরের পার্কও নতুন করে সাজিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এই ধরনের নির্মাণ থেকে ক্ষতি হতে পারে। নানা বিষয়ের উপরে তা নির্ভর করে। তাই এই ধরনের নির্মাণের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।”
সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারের ভূগর্ভস্থ জলাধারটি ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয়। টালা থেকে এখানে জল আসে। এখান থেকে উত্তর ও মধ্য কলকাতায় জল সরবরাহ করা হয়। জলাধারের উপরে কয়েক ফুট মাটি ফেলে শিশু উদ্যান এবং একটি খেলার মাঠ তৈরি করা হয়েছে। এই জলাধারের চার পাশে নানা নির্মাণ হয়েছে। পুরসভার আশঙ্কা, এ ধরনের নির্মাণ আরও হলে জলাধারটির কাঠামোর ক্ষতি হতে পারে। এই জলাধারের কোনও ক্ষতি হলে উত্তর ও মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ সমস্যায় পড়বেন।
পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “জলাধারের উপরে বা ঠিক পাশে নির্মাণ হলে ভূগর্ভস্থ জলাধারের পরিকাঠামোর ক্ষতি হতে পারে। এতে জল সরবরাহে সমস্যা হবে। মেয়রকেও বিষয়টি জানিয়েছি।”
বিভাসবাবু জানান, কিছু দিন আগেই মহম্মদ আলি পার্কের নীচের জলাধারটির সংস্কার করা হয়েছে। এখনও সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারের জলাধারটির সংস্কার করা হয়নি। প্রযুক্তিগত কারণে দেরি হচ্ছে। তবে দ্রুত এ কাজে হাত দেওয়া হবে।
স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) সঞ্চিতা মণ্ডল বলেন, “পার্কের যে অংশে জলাধার রয়েছে তার উপরে কোনও ভাবেই কোনও নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। অন্য অংশেও যাতে কোনও নির্মাণ না হয় সে বিষয়েও নজর রাখছি। পুরসভার নির্দেশে ওখানে কোনও রকম অনুষ্ঠানও করতে দেওয়া হচ্ছে না।” কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়: “জলাধারের উপরে কখনওই নির্মাণ হত না। লাগোয়া অংশে হত। এতে জলাধারের পরিকাঠামোর ক্ষতি হতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা। খুবই জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে আগে যে নির্মাণ হয়েছে তা ভাঙা হবে না। নির্দেশিকা জারির কথাও ভাবা হচ্ছে।”

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.