|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসত |
দাবি ওভারব্রিজের |
ছবি বদলায় না
সত্যজিৎ চক্রবর্তী |
দুই স্টেশন। দুই ছবি। এক জায়গায় ফুটওভারব্রিজ আছে, কিন্তু নিত্যযাত্রীরা তা ব্যবহার না করে লাইনের ওপর দিয়েই পারাপার করেন। অন্য দিকে, ফুটওভারব্রিজ নেই। তাই বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোজ লাইন পারাপার করতে হয় যাত্রীদের। এই দুই বিপরীত ছবি পূর্ব রেলের শিয়ালদহ-বারাসত শাখার যথাক্রমে মধ্যমগ্রাম ও বিরাটি স্টেশনে।
বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে মধ্যমগ্রাম স্টেশনে রেল কর্তৃপক্ষ ফুটওভারব্রিজ তৈরি করেন। মধ্যমগ্রাম স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে পুরসভার কার্যালয় ভবন, মধ্যমগ্রাম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, হাসপাতাল, ইলেকট্রিক অফিস ছাড়াও অধিকাংশ স্কুল এবং বাজার অবস্থিত। ফলে প্রতি দিনই তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকের বাসিন্দাদের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে আসতে হয়। |
|
বিরাটি স্টেশন |
স্কুলে যাওয়ার সময়ে তাড়াহুড়ো করে লাইন পেরোতে গিয়ে অনেক বাচ্চাই পা পিছলে বা হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে সোদপুর রোডে সাজিরহাটে অবস্থিত এপিসি কলেজ। মধ্যমগ্রাম ছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে পড়তে আসা বহু ছাত্রছাত্রীও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পারাপার করেন। রেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বাসিন্দাদের সুবিধার কথা ভেবেই এক নম্বর থেকে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের রাস্তা পর্যন্ত ফুটওভারব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিপজ্জনক ভাবে পারাপারের বদ অভ্যেসটা পাল্টায়নি। স্কুলশিক্ষক সর্বাণী দত্ত বলেন, “ফুটওভারব্রিজ দিয়ে ওঠানামা করতে কষ্ট হয়। তাই রেললাইনের উপর দিয়ে দৌড়ে যাতায়াত করার বদ অভ্যেসটা আমরা অনেকেই ছাড়তে পারিনি।”
অন্য দিকে, বিরাটি স্টেশনে ফুটওভারব্রিজের জন্য দীর্ঘ দিন ধরে আবেদন জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। স্থানীয় সূত্রে খবর, ইউপিএ (এক) সরকারের আমলে ফুটওভারব্রিজের জন্য জমি জরিপ করা হয়েছিল, কিন্তু পরে আর তা বাস্তবায়িত হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ মণ্ডল বললেন, “লাইন পারাপারের সময়ে প্রতি বারই আতঙ্ক হয়। মনে হয় এই মুহূর্তে ট্রেন এসে যাবে। এক বার মেয়েকে নিয়ে লাইন পেরোনোর সময়ে আর একটু হলেই বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছিল।” |
|
|
মধ্যমগ্রাম স্টেশন |
মধ্যমগ্রাম স্টেশনের ফুটওভারব্রিজ |
|
বাসিন্দা অজয় বিশ্বাস বলেন, “হোঁচট খেয়ে বা পিছলে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে মাঝেমধ্যেই। দীর্ঘ দিন ধরে আমরা ফুটওভারব্রিজ বা সাবওয়ের দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ বিশেষ আমল দিচ্ছেন না।” কিন্তু ওভারব্রিজ হলেই কি মানুষ তা ব্যবহার করেন? অজয়বাবু বলেন, “সেটা সচেতনতার প্রশ্ন। সচেতনতা বাড়ানোর জন্য রেলকে উদ্যোগী হতে হবে।” পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক রবীন মহাপাত্র বলেন, “যে সব স্টেশনে ফুটওভারব্রিজ আছে সেখানে বাসিন্দারা যাতে তা ব্যবহার করেন সে জন্য স্টেশনে মাইকে ঘোষণা করা হয়। ফুটওভারব্রিজ থাকা সত্ত্বেও রেললাইনের উপর দিয়ে যাতায়াত করা রেল আইনে জরিমানাযোগ্য অপরাধ। মধ্যমগ্রাম স্টেশনে রেললাইন পারাপারকারীদের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর বিরাটি স্টেশনের ফুটওভারব্রিজের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানাব।” |
ছবি: সুদীপ ঘোষ |
|
|
|
|
|