পূর্ব কলকাতা
ইএম বাইপাস
জমা যন্ত্রণা
রাস্তার ধারে দীর্ঘ দিন জল জমে রয়েছে। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। জন্মাচ্ছে মশা। এমনই অবস্থা ইএম বাইপাসের বেঙ্গল কেমিক্যাল স্টপ থেকে সল্টলেক পর্যন্ত ২০০ মিটার অংশের। অভিযোগ, মাঝেমধ্যে কিছু কাজ হলেও এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। কাছেই রয়েছে একটি শপিং মল এবং বেসরকারি হাসপাতাল।
ইএম বাইপাসের বেঙ্গল কেমিক্যাল স্টপ থেকে সল্টলেক পর্যন্ত ২০০ মিটার অংশে কালো ময়লা জল জমে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ভোলা মণ্ডল বলেন, ‘‘আগেও জমেছিল। তা সাফও করা হয়। মেট্রোর কাজের পরে ফের একই অবস্থা। আমরা কাউন্সিলরকে জানিয়েছি।” বিধাননগর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনুপ মালিক বলেন, “পুরসভাকে একাধিক বার জানিয়ে কোনও কাজ হয়নি। মেট্রোর কাজের পরে নিকাশি নালা ফেটে গিয়েছে। কিন্তু মেরামতি কে করবে তা স্থির হয়নি। বাসিন্দারা আমাকে অভিযোগ জানাচ্ছেন। আমিও যথাস্থানে বার বার জানিয়েছি।’’
শুধু বাসিন্দারাই নন, হাসপাতাল ও শপিং মলে যাতায়াতকারীরাও এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ করেছেন। যেমন, লেকটাউনের বাসিন্দা সুন্দরম সাহার কথায়: ‘‘কর্মসূত্রে রোজ ওই এলাকায় যাই। বেশ কিছু দিন ধরে নোংরা জল জমে রয়েছে। দুর্গন্ধে ভরে গিয়েছে।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, জমা জলে মশা জন্মাচ্ছে। এখন কলকাতা ও সল্টলেকে পুরসভা জোরকদমে মশা দমনে নেমেছে। কিন্তু এখানে কিছু হচ্ছে না।
কেন এই সমস্যা?
সল্টলেকে পুরসভা সূত্রে খবর, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নিকাশি নালা রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। পুরকর্মীদের একাংশের অনুমান, সম্ভবত মেট্রোর পাইলিং করতে গিয়ে ওই নালা দু’টি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। একই অনুমান কলকাতা পুরসভার কর্মীদের একাংশেরও। কলকাতা পুরসভার তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সিপিএমের রাজীব বিশ্বাস সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই আমরা কেএমডিএ-কে সমস্যার কথা জানিয়েছি। বাইপাসের ধারে সার্ভিস রোড অংশে আমরা কাজ করে ফেলেছি। সম্ভবত মেট্রো প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হয়েছে। শুধু বাইপাসেই নয় নারকেলডাঙা মেন রোডেও সমস্যা হচ্ছে।’’
সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস জানাও। তিনি বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কথায়: “সকলেই মিলেই বাসিন্দাদের সমস্যা দ্রুত মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘মেট্রোর কাজের জেরে ক্ষতি হলে তাঁদেরই সারানোর কথা। তবে কার দায়িত্ব তা না ভেবে দ্রুত কী ভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় তা দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সমীক্ষা করা হয়েছে। স্থায়ী সমাধানেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’ যদিও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর তরফে এক আধিকারিক বলেন, “মেট্রোর সঙ্গে ওই সমস্যার সম্পর্ক নেই। ওখানে কেএমডিএ এবং কলকাতা পুরসভার দু’টি নিকাশি নালা আছে। আমরা কাজ করেছি রাস্তার মাঝখানে আর জল জমছে রাস্তার ধারে। ওই দু’টি নালা সাফ করে তবেই আমরা রাস্তা হস্তান্তর করেছি।”

ছবি: শৌভিক দে




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.