বাম বাধায় যাত্রাভঙ্গ, দাবি মমতার
ঞ্চায়েতের তিন স্তরেই আধিপত্য সিপিএমের। তাই বর্ধমানে তাঁরা কাজ করতে পারছেন না বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার দুপুরে অন্ডালের উখড়ায় পঞ্চায়েতের ভোটের প্রচারে জনসভায় মমতা বলেন, “রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বর সব জায়গায় পঞ্চায়েত ওদের। জেলা পরিষদও ওদের। গ্রামসভা থেকে জেলা পরিষদ, সব জায়গায় ওরা। তাই আমরা কাজ করতে পারিনি।” তার পরেই অবশ্য তিনি শিল্পের জমি চিহ্নিত করা থেকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির মতো নানা কাজের ফিরিস্তি দিয়েছেন।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন তোলা ও জমার সময়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে রাজ্য জুড়েই। বর্ধমানেও নানা জায়গায় প্রার্থী ও কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগে সরব হয়েছে কংগ্রেস এবং সিপিএম। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এ দিন সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস মিলে জোট তৈরি করেছে। ওরা বলছে, মনোনয়ন নাকি দাখিল করতে পারেনি। কিন্তু ৫৭০০০ আসনের মধ্যে ৫১০০০-এ লড়াই হচ্ছে। এক লক্ষ সত্তর হাজার প্রার্থী রয়েছেন। কোথাও জিততে পারবে না বলে ওরা আতঙ্কে ভুগছে।” এর পরেই তিনি যোগ করেন, “ওরা বলছে, তৃণমূল সন্ত্রাস করছে। যদি তা সত্যি হয়, আমরা ব্যবস্থা নেব। আর তা মিথ্যা হলে কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম কাউকে ছাড়া হবে না।”
ভোটের গরম।
গত পঞ্চায়েত ভোটে বর্ধমানের ২৭৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২০৭টি দখল করেছিল বামেরা। জেলা পরিষদের ৭৫টি আসনের তিনটিতে জিতেছিলেন সিপিএম-বিরোধীরা। এ বার জেলার ৮০৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চললেও ৪০টি আসনে তারা প্রার্থী দিতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী যেখানে সভা করেন, সেই গলসি ১ ব্লকে গত বার ৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টিই দখল করে বামেরা। বিধানসভা ভোটেও গলসি আসনে জেতেন বাম প্রার্থী, ফরওয়ার্ড ব্লকের সুনীল মণ্ডল। এ বারও সেখানে ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি তৃণমূল।
এ দিন যেখানে জনসভা ছিল, সেই উখড়া গ্রাম পঞ্চায়েতেও ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। তবে এলাকাটি যে বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন, সেই রানিগঞ্জ এ বার তৃণমূল দখল করেছে। উখড়ার সার্কাস মাঠে ভিড়ে ঠাসা জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গত বার রানিগঞ্জ-জামুড়িয়ায় বহু আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। আর পাণ্ডবেশ্বরে ১৪৫টি আসনের মধ্যে আমরা দু’টি আসন পেয়েছিলাম। সেই সন্ত্রাসের মোকাবিলা করেই এখানে এসে পৌঁছেছি।”
অন্ডালের উখড়ায় সার্কাস মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভায় হাজির এই খুদেও।
দিন বারো আগে বার্নপুরে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক দিলীপ সরকার। সরাসরি তাঁর নাম না করেও মমতা বলেন, “কিছু দিন আগে এখানে এক কমরেড খুন হয়েছেন। তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাই। ব্যক্তিগত ভাবে আমি দুঃখিত। কিন্তু ওই ঘটনা কি তৃণমূল বা পুলিশ করেছে?” তার পরেই তাঁর সংযোজন, “দুর্গাপুরে কোটি কোটি টাকার ইউনিয়নের ব্যবসা। পলিটিক্সে লোভী হয়ে গেলে মৃত্যু হবেই।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের প্রতিক্রিয়া, “পুলিশি তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তার আগেই প্রকাশ্য জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের মন্তব্য পুলিশকে প্রভাবিত করার জন্য। এতে পরিষ্কার, দলীয় কর্মীদের আড়াল করতেই তিনি এমন বলেছেন।”
জামা লাল, ঝাণ্ডা তেরঙ্গা। নিজস্ব চিত্র।
বাম-অধ্যুষিত বর্ধমানে উন্নয়ন বাধা পাচ্ছে দাবি করেও পরে মমতা বলেন, “পানাগড়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হচ্ছে। ১৪৫০ একর জমিতে পার্ক হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৫৬৭ একর জমি শিল্পপতিদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে। বিনিয়োগ বারো হাজার কোটি টাকা। চাকরি হবে তিন হাজার মানুষের। এ ছাড়াও শক্তিগড়ে ১৫ একর জমিতে হাব তৈরি হবে। সেখানে ৪৬ হাজার লোকের চাকরি হবে।” পাটুলি ও নতুনগ্রামে ক্লাস্টার শিল্প, বারাবনি ও কুলটিতে ইটের ক্লাস্টার হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্ডাল বিমাননগরীতে ডিসেম্বরের মধ্যে এয়ারবেস চালু হবে বলেও জানান।
ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে সিপিএম কি রাজ্য সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বাধা দিচ্ছে? আসানসোলের সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, “উনি তো জেলা সভাধিপতিকে উপেক্ষা করে জেলাশাসকের মাধ্যমে পঞ্চায়েত চালানোর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কাজ না হয়ে থাকলে কেন হয়নি, তা প্রশাসনকেই জিজ্ঞাসা করুন।”

পুরনো খবর:

ছবিগুলি তুলেছেন ওমপ্রকাশ সিংহ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.