দুর্যোগের মধ্যে কেদারনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে নিজে না ঢুকে অন্য শরণার্থীদের ঢোকানোর দেখাশোনা করছিলেন কংগ্রেস নেতা ব্রজবাসী বিশ্বাস। তাঁকে ডাকতে গিয়েছিলেন স্ত্রী মণিকা বিশ্বাস। এরপরে তাঁদের আর খোঁজ মেলেনি। উদ্ধারের পরে ব্রজবাবুর পরিবারকে এ কথা জানালেন তাঁর সফরসঙ্গীরা।
উত্তরাখণ্ডের চারধামে বেড়াতে যাওয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি ব্রজবাবুর সঙ্গে রবিবার বিকেলের পর থেকে পরিবারের লোকেরা যোগাযোগ করতে পারছেন না। ব্রজবাবুদের সঙ্গে ছিলেন বাঁকুড়া শহরের প্রতাপবাগানের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ সরকার ও তাঁর মা লতিকা সরকার। বৃহস্পতিবার ব্রজবাবুর ছেলে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী পদ্মনাভ বিশ্বাস বলেন, “উদ্ধারকারী দল কেদারনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে অনিরুদ্ধ ও তাঁর মাকে উদ্ধার করেছেন। অনিরুদ্ধ ফোনে জানিয়েছেন, দুর্যোগের সময় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের ধর্মশালা ছেড়ে তিনি ও তাঁর মা কেদারনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে আশ্রয় নেন। কিন্তু বাবা গর্ভগৃহে না গিয়ে মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে দুর্গতদের ভিতরে ঢোকাচ্ছিল। বাবাকে ডেকে আনতে মা মন্দিরের ভিতর থেকে বাইরে বের হয়। কিন্তু তারপর থেকে আর অনিরুদ্ধদের সঙ্গে বাবা-মা’র দেখা হয়নি।”
অনিরুদ্ধের শিক্ষক অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অনুরুদ্ধরাও ব্রজবাবুদের খোঁজ করার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিল। খোঁজ না পেয়ে উদ্ধারকারী দলের সাহায্যে ওরা গুপ্তকাশী হয়ে এ দিন হেলিকপ্টারে হরিদ্বারে যাবে বলে জানিয়েছে।”
পদ্মনাভ জানান, দলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সী থেকে রাজ্য সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যকে ব্রজবাবুর কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ব্রজবাবুর জামাই এ দিন জামসেদপুর থেকে কেদারনাথের উদ্দেশে রওনা দেন। বাঁকুড়া জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দলের কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্ব উত্তরাখণ্ড সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত খুব উদ্বেগে রয়েছি।”
এ দিকে বদ্রীনাথে আটকে পড়া বাঁকুড়ার সোনামুখী-কোতুলপুরের ২৭ জন তীর্থযাত্রীর কাছে উদ্ধারকারী দল এ দিনও পৌঁছায়নি বলে তাঁরা অভিযোগ করেছেন। আটকে পড়া কোতুলপুরের বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু কুণ্ডু ও সোনামুখীর বিজন ঘোষাল ফোনে জানিয়েছেন, সঙ্গে থাকা খাবার ফুরিয়ে এসেছে। পানীয় জলেরও অভাব। কিন্তু ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া বা সরিয়ে নিতে কেউ আসেনি।
|