তৃণমূল কংগ্রেস-গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা গোলমালে উত্তেজনা ছড়াল দার্জিলিং পাহাড়ে। মঙ্গলবার রাতে কার্শিয়াং থানার লাটপাঞ্চারের সেলফু গুম্বাগাওঁ গ্রামে দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধর করে তাঁদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল সমর্থকের দোকানেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আহত তৃণমূল কর্মী জিগমে লেপচা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর মাথায় ও বুকে চোট লেগেছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। জখম এক তৃণমূল কর্মী প্রাথমিক চিকিৎসার পরে বাড়িতেই রয়েছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থকরা মঙ্গলবার রাতে তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। ৮ মোর্চা কর্মীর নামে সেবক ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন লাটপাঞ্চারের তৃণমূল মহিলা সেলের সাধারণ সম্পাদিকা সারদা সুব্বা।
|
আহত তৃণমূল কর্মী জিগমে লেপচা। বুধবারের নিজস্ব চিত্র। |
অভিযুক্তদের ৫ জনকে বুধবার দুপুরে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম অশোক ছেত্রী, ভাস্কর থাপা, ডিবি খাওয়াস, মনোজ থাপা, মটু থাপা। ধৃতেরা সকলেই মোর্চা সমর্থক বলে তৃণমূলের অভিযোগ। এবিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “গোলমালের একটা খবর পেয়েছি। কি নিয়ে গোলমাল তা দলীয় নেতাদের খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি। আহতদের চিকিৎসা চলছে বলে শুনেছি।”
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন,“ ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযুক্তদের ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিদের খোঁজা হচ্ছে।” পাহাড়ে তৃণমূল নেতারা জানান, মোর্চা নেতৃত্ব পাহাড়ে শান্তি বিঘ্নিত করছে। পাহাড়ে সম্প্রতি তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধিতে ভীত হয়ে তারা এ কাজ করছেন। যদিও অভিযোগে আমল দেননি রোশন গিরি। তিনি বলেন, ‘‘আমি দাজির্লিঙে ছিলাম। কিছুই জানি না। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। তৃণমূল নেতারা নিজেরাই এই ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের উপরে দায় চাপাচ্ছেন।”
এই ঘটনার পর লাটপাঞ্চার সহ কার্শিয়াং মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরো ঘটনায় পুলিশি ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আজ বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের আইজি শশীকান্ত পূজারির সঙ্গে তৃণমূলের কার্শিয়াং ইউনিটের সদস্যদের দেখা করার কথা রয়েছে। |
বুধবার ছবিটি তুলেছেন রবিন রাই। |
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে এক দল যুবক তৃণমূল কর্মী ধনবীর রাইয়ের বাড়ি গিয়ে তাঁর খোঁজ করে। তাঁকে না পেয়ে তার দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এলাকার দু’জন তৃণমূল কর্মী বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের এক সূত্র জানান, এলাকা দখল নিয়ে মঙ্গলবার রাতে গোলমালের সূত্রপাত ।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চ মাসে কালিম্পঙের চকবাজারে তৃণমূল নেতা ছং ভুটিয়ার উপরে প্রাণঘাতী হামলার চেষ্টা হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কালিম্পং সহ পাহাড়ের তিন মহকুমায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ২৩ মে কালিম্পঙেরই গরুবাথানে তৃণমূল নেতা খুশ নারায়ণ সুব্বাকে ঢুকতে বাধা দেওয়া এবং তাঁর বাড়িতে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। |