জঙ্গলমহলে চালু হচ্ছে কমিউনিটি রেডিও
ষ্ট করে আর দীর্ঘ পথ উজিয়ে বিডিও অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে হবে না। কান পেতে বাড়িতে বসেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, প্রতিবন্ধী বা বিধবারা জানতে পারবেন, ভাতা কবে মিলবে। কোথায় একশো দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে, পোলিওর টিকা কবে দেওয়া হবে সবই জানা যাবে বাড়িতে বসে, বেতার বার্তায়।
জঙ্গলমহলের মানুষের জন্য ‘কমিউনিটি রেডিও’ চালু করতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। ‘ডিস্ট্রিক্ট ইনোভেশন ফান্ড’ থেকে প্রকল্প রূপায়ন করা হবে। প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এ নিয়ে রাজ্য উন্নয়ন ও পরিকল্পনা দফতরের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে সম্প্রতি। প্রশাসন সূত্রে খবর, পদস্থ আধিকারিকদের সায় রয়েছে এই প্রকল্পে। খরচ ধরা হয়েছে ২২ লক্ষ টাকা।
ঝাড়গ্রামের সেবায়তন বিএড কলেজে প্রধান বেতার কেন্দ্রটি চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বার্তা পৌঁছনো যাবে। এর ফলে ঝাড়গ্রাম, বিনপুর-১, মেদিনীপুর সদর ও জামবনি ব্লকের মোট আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সম্পূর্ণ এলাকা ও তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছুটা অংশে বেতার বার্তা পৌঁছবে। সরকারি খরচে বিভিন্ন গ্রামে রেডিও শোনার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে উপকৃত হবেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
এ রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যে চালু হয়েছে এই পরিষেবা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বছর তিনেক ধরে চলছে ‘রেডিও জেইউ’ ৯০.৮। তবে গ্রামের মানুষের সুবিধার্থে প্রশাসনিক উদ্যোগে এমন ব্যবস্থা এই প্রথম। ছত্তীসগঢ় ও ঝাড়খণ্ডে অবশ্য এই ধরনের ‘কমিউনিটি রেডিও’ চালু হয়েছে। গ্রামবাসীদের উদ্যোগে গ্রামবাসীদের জন্য স্থানীয় খবরাখবর দিয়ে সংবাদপত্রও চালু হয়েছে উত্তর প্রদেশের চিত্রকূট জেলায়। সেখানে অনগ্রসর শ্রেণির মহিলারা প্রথমে হাতে লিখে ‘বুন্দেলি’ ভাষার এই সংবাদপত্র চালু করেছিলেন। ৪০ জন গ্রামীণ মহিলা সাংবাদিকের উদ্যোগে ২০০২ সাল থেকে যাত্রা শুরু করা ‘খবর লেহেরিয়া’ সাপ্তাহিকটি এখন রীতিমতো জনপ্রিয়।
এই উদাহরণ দিয়েই জঙ্গলমহলে ‘কমিউনিটি রেডিও’ চালুর প্রস্তাব রাখে জেলা প্রশাসন। জানা গিয়েছে, জেলা স্তরের প্রস্তাবে রাজ্যের সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটলেই কাজ শুরু হবে।
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার কথায়, “গ্রামের মানুষের কাছে সরকারি সুযোগ-সুবিধের বার্তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পৌঁছয় না। কমিউনিটি রেডিও-র প্রধান লক্ষ্যই হল, বাড়িতে বসে তাঁরা যেন সে সব জানতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।”
যা প্রচারিত হবে
• গরিব মানুষের জন্য সরকারি সুবিধা কী করে পাওয়া যায়
• কী ভাবে জবকার্ড পাওয়া যায়
• কবে, কোথায় শিশুর টিকাকরণ হবে
• মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ।
• ভাতা বিলির তারিখ, আবহাওয়ার পূর্বাভাস
• মানুষের অভিযোগের জবাব
শুধু কাজের কথা নয়, বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানও প্রচারিত হবে রেডিওয়। স্থানীয় শিল্পীদের গান বাজানো হবে। শোনানো হবে এলাকার সংস্কৃতির কথা। গোটা প্রক্রিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে। প্রশাসন জানিয়েছে, প্রথমে সামান্য সাম্মানিকে স্থানীয় যুবক-যুবতীদের কাজে নেওয়া হবে। পরে অনুষ্ঠান জনপ্রিয় হলে বিজ্ঞাপন আসবে। তখন সাম্মানিকও বাড়বে। প্রশাসন জানিয়েছে, প্রথম ধাপে পরিকল্পনা সফল হলে বেতারে বেঁধে ফেলা হবে গোটা জঙ্গলমহল।
সেবায়তন বিএড কলেজকে কমিউনিটি রেডিও পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। বিএড কলেজের অধ্যক্ষ আশিস গুপ্তের কথায়, “পিছিয়ে-পড়া মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যেই আমরা এই কাজ করতে চাই। এ বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে যেটুকু খরচ লাগবে তা দেব। তার সঙ্গে অন্যান্য সহযোগিতাও করব। তবে নিয়মিত খরচ বহন সম্ভব নয়। তাই কর্মী দিতে পারব না।” প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রকল্পের বাজেটের মধ্যেই কর্মীদের জন্য এক বছরের সাম্মানিক ধরা হয়েছে। এই ধরনের কাজে যাঁরা উৎসাহী, তেমন তরুণ-তরুণীদের খোজও চলছে। তারপর? রেডিও চালিয়ে লাভ হলে কর্মীদের পারশ্রমিক মিলবে, নতুবা স্বেচ্ছাশ্রম, আপাতত এমনই স্থির হয়েছে।
কিন্তু জঙ্গলমহলের মতো ঝুঁকিপূর্ণ একটি এলাকায় রেডিও চ্যানেল চালানোর বিষয়টিকে কী ভাবে দেখছে পুলিশ? রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, “পুলিশ যে ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে, কমিউনিটি রেডিও তার চাইতে কম ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করলে অনুমতির প্রয়োজন নেই। ওঁরা কত ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করছেন, খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

মমতাকে দুষেই কংগ্রেস ইস্তাহার
সারদা-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুষেই বুধবার পঞ্চায়েত ভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করল কংগ্রেস। সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে পৃথক একটি অধ্যায়ই রাখা হয়েছে ইস্তাহারে। সারদা-কাণ্ডে তৃণমূলের বিভিন্ন মন্ত্রী-নেতার নাম জড়িয়েছে। অথচ গত এপ্রিলে ওই কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি পয়লা বৈশাখের আগে কিছুই জানতেন না। সেই প্রসঙ্গ এনেই ইস্তাহারে কংগ্রেসের কটাক্ষ, ‘গত দু’বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বারবার রাজ্যের গোয়েন্দা দফতর, অর্থ দফতর, উপভোক্তা দফতরকে সতর্ক করেছে ক্রমবর্ধমান চিট ফান্ডের রমরমা নিয়ে। সুতরাং মুখ্যমন্ত্রী জানতেন না, এটা কোনও ভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়’। সেখানে আরও বলা হয়েছে, ‘সারদা কেলেঙ্কারির বলি হয়েছেন ২৪ জন গ্রামবাসী। বাংলায় এই মৃত্যুর মিছিল আরও দীর্ঘ হচ্ছে’। শাসক তৃণমূলেরে কাছে এর কৈফিয়তও দাবি করেছে কংগ্রেস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.