রানিতলায় কিশোরী খুনের আট দিন পর মূল অভিযুক্ত হকদার শেখকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে লালগোলার সীতেশনগরের একটি আমবাগান থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ধৃতকে বুধবার আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পাকড়াও করা হয়েছে হকদারের বাবা সামেদ আলিকেও।
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মৃণাল মজুমদারের নেতৃত্ব পুলিশ বাহিনী খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত দুটো নাগাদ লালগোলা থানার সীতেশনগরের একটি আমবাগানে পৌঁছয়। ওই বাগানের একটি আম গাছের নিচে ঘুমিয়ে ছিল ঘটনার মূল অভিযুক্ত হকদার। সে কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
|
গত ১১ জুন রাত থেকে নিখোঁজ ছিল রানিতলার সোনাডাঙা গ্রামের ওই কিশোরী। ১৫ জুন বাড়ির অদূরের এক পাট খেত থেকে তার পচা-গলা দেহ মেলে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর এ দিন দাবি করেন, “ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্কের জেরে ওই কিশোরীকে খুন করা হয়েছে। জেরায় হকদার এমনই জানিয়েছে। পড়শি অন্য এক যুবকের সঙ্গে সম্প্রতি তার সম্পর্কের জেরে ক্ষেপে উঠেছিল হকদার।” তিনি জানান, জেরায় ওই যুবক স্বীকার করেছে, পড়শি ওই যুবকের গলা নকল করে তারই ফোন থেকে মেয়েটিকে পাট খেতে ডেকে পাঠিয়ে ওড়নার ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে ওই কিশোরীকে।” তিনি অবশ্য ময়নাতদন্তের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ময়নাতদন্তকারী এক চিকিৎসক বলেন, “ওই কিশোরীর দেহ শেয়ালে খেয়ে ফেলেছিল। ডান হাত, পায়ের দিকের কিছুটা অংশ আর মাথার চুল পাওয়া যায়। খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না তা কোনও ভাবেই বোঝা সম্ভব ছিল না। তাই ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি হয়নি, তা স্পষ্ট ভাবে বলা যায়নি।” |
জেলা পুলিশ সুপারের সমালোচনা করে জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “কামদুনির মত ঘটনা প্রতি জেলায় ঘটছে। ওই সব ঘটনা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠার পরেই পুলিশ প্রশাসনের হুঁশ ফিরল। ঘটনার চার দিন পরে যখন মৃতদেহ উদ্ধার হল, তত দিনে ধর্ষণের যাবতীয় প্রমাণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।”
ওই ঘটনার প্রতিবাদে জেলা জুড়ে বুধবার ১২ ঘন্টার বন্ধ ডেকেছিল কংগ্রেস। এলাকার বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রী মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদে সামিল হয়। এলাকায় মোমবাতি মিছিলও করে তারা।
|