|
|
|
|
ধোনি তীব্রতম ব্যঙ্গে বিঁধলেন নিজের মিডিয়াকে
গৌতম ভট্টাচার্য • কার্ডিফ |
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে ভারতীয় মিডিয়ার ভাব-ভালবাসা সফরের প্রথম দিন ধরে চলছে। ভারত যত এগোচ্ছে, তত যেন ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ঢুকে পড়ছেন ভারত অধিনায়ক। আর হিন্দিতে সাংবাদিক সম্মেলন? সেটা এ দিনও করলেন না।
|
প্রশ্ন: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যখন শুরু হয়েছিল এ বার কেউ আপনার টিমকে হাতের মধ্যে সে ভাবে নেয়নি। সবাই ভেবেছিল, বিতর্কের ছায়া টিমকে সমস্যায় ফেলবে। তাই আপনাদের ওপর কোনও চাপ ছিল না। এ বার যত সময় যাচ্ছে লোকে তত ভারত সম্পর্কে ধন্য ধন্য করছে। পরিবর্তিত সময়ে কি চাপ অনুভব করছেন?
ধোনি: কী বলছেন বুঝতেই পারছি না ভাই। আপনারা বলছেন আমাদের নিয়ে কোনও আশা ছিল না। কারা বলেছিল? জানি না। আমরা তো তেমন কিছু ভাবিনি। আমরা ভাল খেলব বিশ্বাস নিয়েই এখানে এসেছি। প্রত্যেকটা নেট সেশন মন দিয়ে করে যাচ্ছি। আপনারা বললেন, কোনও আশা আমাদের ওপর করেননি। আবার আপনারাই বলছেন, আমাদের ওপর নাকি সব আশা। এটাও কারা বলছে জানি না। নামাচ্ছেনও আপনারা ওঠাচ্ছেনও আপনারা। গড়বেনও আপনারা। ভাঙবেনও আপনারা। বাঃ।
প্র: দোসরা এপ্রিলের ওয়াংখেড়ে ফাইনালকে কি এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার রেফারেন্স পয়েন্ট ধরা যায়!
ধোনি: না, তার পর থেকে দু’টো টিমই অনেক বদলেছে। তাই পুরনো হিসেব এখন মূল্যহীন। আপনার প্রশ্নের উত্তর, রেফারেন্স পয়েন্ট করা যাবে না।
প্র: দু’হাজার সালে সৌরভের নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেটের দুর্ধর্ষ রূপান্তর হয়েছিল। এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই একঝাঁক নতুন ছেলে উঠে এসেছিল। এ বার বিদায়ী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও আপনার অধিনায়কত্বে একঝাঁক নতুন ছেলে উঠে এল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সঙ্গে কি ভারতীয় ক্রিকেটে অভ্যুদয়ের কোনও সম্পর্ক রয়েছে?
ধোনি: ওহ, তাই তো! এটাই তো শেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তা হলে তো আর ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন রূপান্তর ঘটবে না (মুখেচোখে তীব্র ব্যঙ্গ)।
প্র: এই টিমটাই কি ২০১৫ বিশ্বকাপের ভারতীয় দল? দ্বিতীয় প্রশ্ন, এই নতুন নতুন ছেলেদের আপনি কী ভাবে উদ্দীপ্ত করেন?
ধোনি: ২০১৫ এখনও অনেক দূরে। তবে এই টিমের অনেকেই সেই স্কোয়াডে থাকবে বলে মনে হচ্ছে। আর আমার রোল-টোল কিছু নেই। প্লেয়াররা নিজেরাই নিজেদের দায়িত্ব বোঝে। কী করতে হবে জানে। |
কার্ডিফে ধোনির ছবি তুলেছেন সৌমিত্র বসু |
প্র: টিমে ডানকান ফ্লেচারের ভূমিকা সম্পর্কে কী বলবেন?
ধোনি: ফ্লেচার বেসিকস-টা খুব ভাল জানেন। উনি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন টিমটা একেবারে শীর্ষে ছিল। সেটা বজায় রাখাটাও প্রচণ্ড চাপ ছিল। যেটা ওঁর সমস্যা করছিল, এখন আমরা ঢেলে আবার নতুন করে সব গড়ছি। ওঁর ওপর চাপ অনেক কম। উনিও রাস্তা নতুন করে তৈরির ব্যাপারটা উপভোগ করছেন।
প্র: শ্রীলঙ্কাকে আপনারা এত খেলেন। চমক কিছু তৈরি করবেন কী করে? সবই তো ওরা জানে।
ধোনি: চমক? করব না তো! টিম মিটিং আরও পনেরো মিনিট অন্তত কমে গেল। কী মজা!
প্র: দক্ষিণ আফ্রিকার যা অবস্থা ইংল্যান্ড ফাইনালে প্রায় চলেই গ্যাছে। কী বলবেন সম্ভাব্য ফাইনালিস্ট হিসেবে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পর্কে?
ধোনি: ফাইনাল কী ভাই, আমি ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছি আগামীকাল নিয়ে। যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই, তা নিয়ে কথা বলে কী লাভ?
প্র: ম্যাচগুলো যে এত লো স্কোরিং হচ্ছে সেটার কারণ কী? বল তো সুইং বেশি করছে না?
ধোনি: মনে হয় ঠান্ডায় ব্যাটসম্যানরা জমে যাচ্ছে। তাই স্ট্রাইক রোটেট করতে পারছে না। কী বলেন? আর সুইং বেশি করছে না বুঝি? এক্সপার্টরা তো ভাই বলছে যে দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি সুইং হতে হবে। আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে অবশ্য বলে, ছোট সুইং হলেই যথেষ্ট। কী জানি।
প্র: সব দেশের মধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে মালিঙ্গার রেকর্ড সবচেয়ে খারাপ। এর কারণ কী?
ধোনি: এর কারণ আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে মনে হয়, ওর বিরুদ্ধে নিয়মিত আমাদের ব্যাটসম্যানদের খেলার সুযোগ। আইপিএলেও তো ওকে ভরপুর খেলার সুযোগ আসে।
প্র: তা হলে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে কোনও চমক থাকবে না?
ধোনি: চমকটা কে দেবে? ওরা না আমরা?
(শেষ হয়ে গেল সাংবাদিক সম্মেলন। পরিচিত মিডিয়ার লোকেদের কারও সঙ্গে চোখ পর্যন্ত না মিলিয়ে ভারত অধিনায়ক উঠে পড়লেন চেয়ার থেকে।) |
|
|
|
|
|