বেআইনি ভাবে একটি জলাভূমি ভরাট করে বাড়ি এবং রাস্তা তৈরির অভিযোগে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করল উত্তরপাড়া থানার পুলিশ।
হিন্দমোটর স্টেশনের কাছেই, রেল লাইনের উত্তর দিকে ওই জলাভূমি রয়েছে। এর উপরে বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা নির্ভরশীল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই জলা ভরাটের জন্য একটি চক্র সক্রিয়। কিছু দিন আগে দেবাইপুকুর এলাকার শহিদ ক্ষুদিরাম উদ্যান সোসাইটি মাঠের পাশে জলাভূমিটির কয়েক কাঠা ভরাট করা হয়। রাতারাতি টিনের ছাউনির দু’টি বাড়ি এবং একটি কাঁচা রাস্তা হয়। ‘জলাভূমি ভরাট বিরোধী প্রস্তুতি কমিটি’ নামে একটি কমিটি তৈরি করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ শুরুতেই এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভাতেও জলাভূমি ভরাট রুখতে লিখিত আবেদন জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশেরও দ্বারস্থ হয় ওই কমিটি। তাদের আশঙ্কা, এ ভাবে ভরাট হলে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক মনন চৌধুরী বলেন, “জলাভূমিটির গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা তাই ভরাটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি।” |
অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ জানায়, অভিযোগের সারবত্তা প্রমাণিত হওয়ায় নিয়ম মোতাবেক সুয়োমোটো মামলা রুজু করা হয়। মঙ্গলবার রাতে সবিতা চৌরাসিয়া এবং ঊষা শর্মা নামে ওই দুই মহিলাকে ধরা হয়। বুধবার শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
তদন্তকারীরা জানান, ধৃতদের বাড়িতে থাকা কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, হিন্দমোটরের রাধাগোবিন্দনগরের বাসিন্দা রেবতী দাস নামে এক মহিলার কাছ থেকে দু’কাঠা আট ছটাক করে জলাভূমিটির জমি কেনেন সবিতা এবং ঊষাদেবী। ২০১০ সালের ৫ মে শ্রীরামপুরে জেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জমির রেজিস্ট্রি হয়। ওই বছরেই ৩০ সেপ্টেম্বর উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভা জমির মিউটেশন করে। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, “আদৌ সঠিক উপায়ে ওই জমি বেচাকেনা বা মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (জনস্বাস্থ্য ও পরিষেবা) দিলীপ যাদব বলেন, “ওখানে ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখব।” শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, “পুলিশ তদন্ত করছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
|