পঞ্চায়েত ভোট দোরগোড়ায়। কিন্তু হুগলিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরাম নেই। সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দ্রুত মিটিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা যাতে একযোগে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে কাজ শুরু করেন, সে ব্যাপারে বুধবার তাঁদের নির্দেশ দিয়ে গেলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
বারবার হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও হুগলিতে দলের কর্মীদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব যে দূর হয়নি, এ দিন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কথাতেই স্পষ্ট। চুঁচুড়ার পিপুলপাতিতে দলীয় কর্মিসভায় পার্থবাবু বলেন, “বামফ্রন্টকে হটিয়ে মানুষ আমাদের যে সম্মান দিয়েছে, তা ধরে রাখতে নিজেদের মধ্যে কোনও মান-অভিমান, ভুল বোঝাবুঝি চলবে না। যাঁরা ইতিমধ্যেই ভুল করে ফেলেছেন, তাঁরা দলের মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে প্রচারে নামুন।” প্রার্থিপদ নিয়ে হুগলিতে তৃণমূলের ক্ষোভ-বিক্ষোভ কম নেই।
তৃণমূল সূত্রের খবর, যে সব নেতা-কর্মী দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ‘নির্দল’ হিসেবে লড়ছেন, প্রয়োজনে তাঁদের লিফলেট ছড়িয়ে নিজেকে বিরত রাখা এবং দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন করতে বলবে দল। একই সুরে দলের শৃঙ্খলা এবং সংগঠন মজবুত করার উপরে জোর দেন সুব্রত বক্সি। তিনি বলেন, “কোথাও কোনও ভুল-বোঝাবুঝি থাকলে মিটিয়ে নিন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রচারে বেরোন।” শিল্পমন্ত্রী বলেন, “সিপিএম আমাদের উপর সশস্ত্র হিংসা চাপিয়ে দিয়েছিল। ২০০৩ এবং ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের কোথাও দাঁড়াতে দেয়নি। সিপিএমের খুনের রাজনীতির জন্যই তাদের নির্বাসনে পাঠিয়েছে মানুষ। ওদের হিংসার বিকল্প হিসেবে অহিংস আন্দোলন করে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। সেই সংযমী ভূমিকা আমাদের বজায় রাখতে হবে।” এর বিচ্যুতি হলে দল তা বরদাস্ত করবে না বলেও তিনি সতর্ক করে দেন।
বর্তমান সরকারের দু’বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও রাজ্যে সে ভাবে শিল্প আসেনি বলে অভিযোগ বিরোধীদের। পঞ্চায়েত ভোটে এর প্রভাব যাতে না পড়ে, সে জন্য শিল্পমন্ত্রী রাজ্যে শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন। তাঁর কথায়, “পঞ্চায়েত ভোটের পরেই হাওড়া-হুগলি শিল্পাঞ্চলে বেশ কয়েকটি ভাল খবর শোনাতে পারব বলে আশা করছি।”
তবে কোন শিল্প আসছে, সে ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট সাবধানী। এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ভাঙেননি পার্থবাবু। তবে, রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্বাচনের পরে হাওড়ায় বামালরি শিল্পগোষ্ঠী একটি প্রকল্প করবে। আন্তর্জাতিক মানের ফুডপার্ক এবং লজিস্টিক পার্ক তৈরিরও কথা অনেকটা এগিয়েছে। জমিও চূড়ান্ত। |