শুধু সাহিত্য-দর্শন নয়, শহরের গবেষকদের এ বার নতুন লক্ষ্য বিজ্ঞানসাধক রবীন্দ্রনাথকে খুঁজে বার করা। সেই লক্ষ্যপূরণেই বুধবার যাত্রা শুরু করল ‘টেগোর সেন্টার অফ ন্যাচারাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিলজফি’। বসু বিজ্ঞান মন্দিরে এই গবেষণাকেন্দ্রের উদ্বোধনে ছিলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, কেন্দ্রের পরিচালন সমিতির প্রধান ও বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের সচিব টি রামস্বামী-সহ বিশিষ্টজনেরা।
কী করবে এই কেন্দ্র? বিকাশবাবু জানান, রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য, বিজ্ঞান ও দর্শনের মধ্যে মেলবন্ধনের আবহ তৈরি করেছে। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই কাজ করবে এই কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই রবীন্দ্রনাথের ‘বিশ্ব পরিচয়’ গ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা রয়েছে ‘স্কুল অফ ন্যাচারাল সায়েন্সেস’, ‘স্কুল অফ ফিলজফি অ্যান্ড সায়েন্সেস’, ‘স্কুল অফ সায়েন্স অ্যান্ড কালচার’ এবং ‘স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল কোলাবোরেশন অ্যান্ড কো-অপারেশন’ তৈরির। আলোচনাসভা, বক্তৃতার আয়োজনও থাকবে বলে বিকাশবাবু জানান। |
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ফাঁকে টি রামস্বামী ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলছেন
বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ। বুধবার, বসু বিজ্ঞান মন্দিরে।—নিজস্ব চিত্র |
এই কেন্দ্রের প্রাসঙ্গিকতা বোঝাতে গিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তুলে ধরেন দেবেন্দ্রনাথের সঙ্গে উত্তর ভারতের ডালহৌসি বেড়াতে গিয়ে ছোট্ট রবির রাতের আকাশ চেনার কথা। সৌমিত্রবাবুর মতে, বারো বছর বয়সে রাতের আকাশ চেনার মধ্যে দিয়েই রবীন্দ্রনাথের মনে বিজ্ঞানের অনুসন্ধিৎসার শুরু। যা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় প্রকাশিত ‘গ্রহগণ জীবের আবাসভূমি’ রচনায় ফুটে উঠেছে। শুধু তাই নয়, পরবর্তীকালে কবির নানা লেখালেখিতেও বারে বারে বিজ্ঞান ও দর্শন মিলেমিশে গিয়েছে। এ দিন রাজ্যপালের বক্তৃতাতেও বার বার ফিরে এসেছে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আইনস্টাইনের আলোচনা এবং মত বিনিময়ের প্রসঙ্গ।
ঘটনাচক্রে, চলতি বছরেই রবীন্দ্রনাথের নোবেল জয়ের শতবর্ষ পূর্তি। এমন সময়ে এই কেন্দ্রের উদ্বোধন স্বভাবতই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিতেরা। |