নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
ঘর ছাড়া নেতা কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে বাড়ি ফেরানোর দাবিতে কোচবিহারে জেলাশাসকের দফতরে এই দিন দুপুর আড়াইটে থেকে আড়াই ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভ করেছে বামফ্রন্ট। বামেদের অভিযোগ, কোচবিহার জেলা জুড়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের দেড়শোরও বেশি প্রার্থী আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন শুধু জেলা সিপিএম দফতরেই।
ফরওয়ার্ড ব্লক-সহ অন্য দলের প্রার্থীদের একাংশেরও ওই অবস্থা বলে অভিযোগ। যদিও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের গ্রামে ফেরানোর বিষয়ে প্রশাসনের কোনও স্তর থেকেই উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায় বলেন, “জেলা জুড়ে দু’শোরও বেশি বাম প্রার্থী তৃণমূলের সন্ত্রাসে ঘর ছাড়া। তাদের বাড়িতে হামলা হচ্ছে। পরিজনদের মারধরের ঘটনাও চলছে। বাইক বাহিনী গ্রাম দাপিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশকে অভিযোগ করেও লাভ হচ্ছে না। শিবিরে থেকে প্রচার সম্ভব নয়। তাই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে সবাইকে বাড়ি ফেরানোর দাবি জানানো হয়েছে।” |
কোচবিহারে জেলাশাসকের দফতরে অবস্থান বামেদের। মঙ্গলবার হিমাংশুরঞ্জন দেবের তোলা ছবি। |
কোচবিহারের ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ নৃপেন রায় বলেন, “জেলাশাসক প্রার্থীদের বাড়ি ফেরানোর ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। দেখা যাক কী হয়।” প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায় সিপিআই নেতা পার্থপ্রতিম সরকার আরএসপির তাপস সাহা প্রমুখও ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
অবস্থানে সামিল প্রার্থীদের মধ্যে পানিশালার বাসিন্দা অঞ্জু বর্মন বলেন, “কোচবিহার ১ ব্লক জেলা পরিষদ আসনে সিপিএমের টিকিটে লড়ছি। মনোনয়ন দাখিলের পরেই তৃণমূল বাড়ি ভাঙচুর করায় স্বামীকে নিয়ে দলের জেলা দফতরে আশ্রয় নিয়েছি। প্রচার তো দূরের কথা, বাড়ি যেতে ভয় হচ্ছে।” জিরানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী মায়া রায় বলেন, “জিতলেও গ্রামে থাকতে দেবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। কত দিন পার্টি অফিসে থাকতে হবে জানি না।”
তৃণমূল অবশ্য বামেদের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের প্রদেশ সম্পাদক আবদুল জলিল আহমেদ বলেন, “কাউকে গ্রামে থাকতে বাধা দেওয়ার ঘটনাই ঘটেনি। জনসমর্থন না থাকায় প্রচারে বিপাকে পড়ে এ সব অভিযোগ তুলে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছে বামেরা।”
কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী জানিয়েছেন, পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে ওই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জেলার পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে দেখা হবে।” |