হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি প্রার্থী নৃপেন মণ্ডলকে খুনের অভিযোগে কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টির (অতুল) নেতা সুকুমার রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে ১৪ দিন পুলিশি হাজতে রাখতে বলেছে আদালত। তবে বিজেপি-র অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। এ দিন কোচবিহারেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছে বামফ্রন্ট। তাদের গ্রামছাড়া প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গ্রামে ফেরানোর দাবিতে ডিএম দফতরে আড়াই ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভ করে জেলা বামফ্রন্ট। |
নৃপেনবাবুকে প্রচার থেকে ফেরার পথে গুলি করে খুন করা হয় রবিবার রাতে। তৃণমূলের হবিবপুর ব্লক সভাপতি-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল বিজেপি। কাউকেই গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ দেখায় তারা। বিজেপি-র জেলা সভাপতি শিবেন্দুশেখর রায় বলেন, “শাসক দলের অভিযুক্ত নেতা ও প্রার্থীদের আড়াল করতেই পুলিশ কেপিপি নেতাকে গ্রেফতার করেছে।” তবে মালদহের এসপি কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মোবাইলের সূত্র ধরেই সুকুমারকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বাড়িতে নম্বরবিহীন একটি মোটরসাইকেলও মিলেছে। এলাকায় কেএলও সক্রিয় হচ্ছে। ধৃতের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
আলাদা রাজ্য ও ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে ১৯৯৬ সালে কামতাপুর পিপলস পার্টির জন্ম। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায়ের একাংশের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে তারা ছড়িয়ে পড়ে নানা জায়গায়। পরে দলের মধ্যে নানা গোষ্ঠী জন্ম নেয়। ২০০৪ সালে অতুল রায়ের নেতৃত্বে কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টির জন্ম হয়। কামতাপুর পিপলস পার্টির সভাপতি নিখিল রায়।
মালদহের বামনগোলা ও হবিবপুর এলাকায় ওই দলের প্রভাব আছে। জেলা তৃণমূল সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্রের কথায়, “এই ঘটনায় দলের কেউ জড়িত নন। কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টির প্রভাব যে এলাকায় বাড়ছে, তা ঠিক। সেই প্রভাব আমরা রাজনৈতিক ভাবেই মোকাবিলা করব।” এলাকার জনপ্রিয় নেতা নৃপেনবাবুকে খুনের প্রতিবাদে বিজেপি-র ডাকা এ দিনের ১২ ঘণ্টার হবিবপুর ও বামনগোলা বন্ধ ছিল শান্তিপূর্ণ। এলাকার অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল।
কোচবিহারে এ দিন দুপুরে আড়াই ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভ করে বামফ্রন্ট। বামেদের অভিযোগ, কোচবিহার জেলা জুড়ে বিভিন্ন শরিক দলের প্রার্থীরা তৃণমূলের সন্ত্রাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বেশ কিছু প্রার্থীর বাড়িতে ভাঙচুর, হামলাও হয়েছে। তাঁদের দাবি, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের দেড়শোরও বেশি প্রার্থী আশ্রয় নিয়েছেন শুধু জেলা সিপিএম দফতরেই। তৃণমূল অবশ্য সন্ত্রাসের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রশাসনও দাবি করেছে, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
|