বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের খবরে দেরি, সন্দিহান রাজ্য

• পরিকাঠামোয় কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি মালদহের রতুয়ায় টানা চার দিন বিদ্যুৎ ছিল না। কিন্তু সেই খবর সল্টলেকের বিদ্যুৎ ভবনে পৌঁছয়নি। এমনকী বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্তও বিষয়টি জানতেন না। শেষে স্থানীয় কয়েক জন জনপ্রতিনিধি মারফত রতুয়ার খবর মহাকরণে পৌঁছলে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আধিকারিকেরা নড়েচড়ে বসেন।
• কিছু দিন আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক জনের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। বণ্টন সংস্থার গাড়ি ভাঙচুর হয়। সেই খবরও সময়মতো পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ ভবনে।
• বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সমস্যা জানাতে যে-সব কলসেন্টার রয়েছে, তা নিয়েও অভিযোগের শেষ নেই।
বিদ্যুৎ ভবন সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে এই ধরনের ছোট-বড় ঘটনা সম্পর্কে ইদানীং অন্ধকারে থাকছেন বণ্টন সংস্থার আধিকারিকেরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্য জুড়ে এই অব্যবস্থার খবর তৃণমূলের কিছু বিধায়ক ও সাংসদ মারফত পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তার পরেই টনক নড়েছে বিদ্যুৎকর্তাদের।
সল্টলেকে একটি ‘সিস্টেম কন্ট্রোল রুম’ (নম্বর: ৮৬৯৭৭০৬৯৫৪) চালু করছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারের অধীনে দিনরাত সেই পরিষেবা চালু থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ডিভিশনাল ম্যানেজারদের জানানো হয়েছে, লোডশেডিং, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট, বিক্ষোভ, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া যা-ই ঘটুক, সঙ্গে সঙ্গে জানাতে হবে কন্ট্রোল রুমে।
মমতা ক্ষমতায় এসেই ‘সকলের জন্য আলো’র কথা বলেছিলেন। সেই অনুযায়ী গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের কাজও চলছে। তা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ পরিষেবায় গোলমাল বা দুর্ঘটনার খবর কেন সময়মতো ঠিক জায়গায় পৌঁছচ্ছে না, সেই প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনেই। রাজ্যের এক বিদ্যুৎকর্তা বলেন, “কেন খবর এসে পৌঁছচ্ছে না, আমরা তা জানার চেষ্টা করছি। তবে আপাতত আমাদের সব ডিভিশনাল ম্যানেজারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে তা যেন কন্ট্রোল রুমে জানানো হয়।”
যথাসময়ে ওই সব খবর ঠিক জায়গায় না-পৌঁছনোর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধির গন্ধ পাচ্ছে বিদ্যুৎ দফতর। তাদের বক্তব্য, কোনও এলাকায় চার দিন বিদ্যুৎ থাকছে না, অথচ সেই খবর বিদ্যুৎ ভবনে পৌঁছচ্ছে না সাধারণ ভাবে এমন হওয়ার কথা নয়। দফতরের কর্তাদের কারও কারও মতে, এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সম্পর্ক রয়েছে কি না, দেখা দরকার।
বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর, কর্মীদের দুই-তৃতীয়াংশই এখন শাসক দলের বিরোধী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বিদ্যুৎকর্মীদের একাংশের অভিযোগের তির তাঁদের দিকেই। তবে বণ্টন সংস্থার আইএনটিইউসি অনুমোদিত কর্মী সংগঠনের নেতা মিলন চৌধুরীর মতে, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁর কথায়, “একে তো নজরদারিতে কর্মীর সংখ্যা যথেষ্ট নয়। তার উপরে বণ্টন সংস্থার যোগাযোগ বিভাগের কাজের ধারা সম্পর্কে কর্মীদের ওয়াকিবহাল করার চেষ্টা নেই। তাই ভুগতে হচ্ছে।”
সিটু অনুমোদিত সংগঠনের নেতা দীপক রায়চৌধুরী আবার এই সমস্যার জন্য সংস্থার প্রশাসনের সঙ্গে কর্মীদের দূরত্ব বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “বর্ধমানের একটি এলাকায় লো-ভোল্টেজের জন্য এক ইঞ্জিনিয়ারকে বদলি করা হয়েছে। কর্মীদেরও যথেচ্ছ বদলি করা হচ্ছে। তাই কর্মীরা অনেক কিছু জানলেও বলতে ভয় পাচ্ছেন।”
ওই নেতার অভিযোগ, পরিকাঠামো এবং কর্মীর অভাব তো রয়েছেই। তার চেয়ে বড় সমস্যা প্রশাসনের সঙ্গে কর্মীদের দূরত্ব বেড়ে যাওয়া। সংস্থার প্রশাসনের সঙ্গে কর্মী ইউনিয়নগুলির বৈঠকে বসার রেওয়াজ ছিল। এখন তা হয় না।

৮৬৯৭৭০৬৯৫৪



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.