রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ১০.৬ শতাংশ আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। তৃতীয় দফার ভোটের মনোনয়ন পত্র পরীক্ষার পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে মোট ৫৮ হাজার ৮৬৫ আসনের মধ্যে ৬,২৫০টিতে কোনও ভোটাভুটি ছাড়াই ফল নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে। আর এই সব আসনের মধ্যে ৯৮ শতাংশেই জিতেছেন শাসক দল তৃণমূলের প্রার্থীরা।
তবে প্রথম দফায় মনোনয়ন জমা পড়ার পরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের নিরিখে এ বারের পঞ্চায়েত ভোট অন্য সব বারের রেকর্ড ভেঙে দেবে বলে যে সন্দেহ দানা বাঁধছিল, শেষ পর্যন্ত তা সত্যি হয়নি। প্রথম দফার ৯টি জেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতার হার ছিল ১৪.৫ শতাংশ। পরের দুই দফায় সেই হার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করেছিলেন নির্বাচন কমিশনের অফিসারেরাই। কিন্তু মঙ্গলবারের পরিসংখ্যান বলছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের রেকর্ড ধরে রেখেছে ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটই। সে বার ৫৮ হাজার ৩১৩টি আসনের মধ্যে ৬ হাজার ৮০০-তে, অর্থাৎ ১১.৬ শতাংশ আসনে কোনও ভোটাভুটি হয়নি। সে বারও ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রেই লাভ হয়েছিল তৎকালীন শাসকজোট বামফ্রন্টের।
নির্বাচন কমিশনের সচিব তাপস রায় এ দিন জানান, এ বার গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮ হাজার ৮০০টি আসনের মধ্যে ৫ হাজার ৩৫৬টিতে, পঞ্চায়েত সমিতির ৯ হাজার ২৪০টি আসনের মধ্যে ৮৭৯টিতে এবং জেলা পরিষদের ৮২৫টি আসনের মধ্যে ১৫টিতে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না। জেলা পরিষদের ১৫টি আসনের মধ্যে ৬টি হুগলিতে, ৭টি বীরভূমে, বাকি ২টি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
২০০৩ সালকে হারাতে না পারলেও, ২০০৮-কে কিন্তু অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে ২০১৩। ২০০৮-এ মাত্র ৫.৫৭ শতাংশ আসনে (৫১ হাজার ৫২টি আসনের মধ্যে ২৮১২টি) কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। কমিশনের একটি সূত্র বলেন, ২০০৮ সালই রাজ্য রাজনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিল। তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূলের শক্তি তখন ক্রমেই বাড়ছিল। তাই সে বার বামফ্রন্টের সঙ্গে সমানে টক্কর দিতে পেরেছিল তারা। এ বার পাল্লা পুরোপুরি ঘুরে গিয়েছে। |