সানমার্গের এজেন্টের অপমৃত্যু
মেয়ের বিয়ের জন্য আমানতকারীকে মঙ্গলবার হাজার পঞ্চাশেক টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল অর্থ লগ্নি সংস্থার এক এজেন্টের। সোমবার রাত পর্যন্ত সেই টাকা জোগাড় করতে পারেননি তিনি। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির গোয়ালে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মিলল ওই এজেন্টের ঝুলন্ত দেহ।
পুলিশ জানায়, ওই এজেন্টের নাম প্রশান্ত হালদার (২৬)। বাড়ি বারুইপুরের বেদবেড়িয়ায়। বছর ছয়েক ধরে সারদা, সানমার্গ-সহ আটটি অর্থ লগ্নি সংস্থার এজেন্টের কাজ করছিলেন ওই যুবক। এলাকার অনেক বাসিন্দাই তাঁর মাধ্যমে সেই সব সংস্থায় টাকা লগ্নি করেন। তিনি যে-সব সংস্থার এজেন্ট ছিলেন, তার বেশ কয়েকটি হয় বন্ধ হয়েছে বা পাততাড়ি গুটিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না-পারার হতাশায় এবং মানসিক অবসাদেই প্রশান্ত আত্মহত্যা করেছেন। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রশান্তের স্ত্রী অনিতা বলেন, “ভোরে স্বামীকে বিছানায় না-দেখে উঠে পড়ি। ঘরের বাইরে গিয়ে দেখি, ও গোয়ালঘরে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলছে।” প্রশান্তের বাবা গোপাল হালদার জানান, মাস তিনেক ধরে বিভিন্ন আমানতকারী বাড়িতে এসে টাকা ফেরতের ব্যাপারে তাঁর ছেলের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। কোনও দিন অবশ্য প্রশান্তের সঙ্গে তাঁদের গোলমাল হয়নি। তিনি জানান, বাজার থেকে টাকা ধার করে কয়েক জনকে বিনিয়োগের টাকা ফেরতও দিয়েছিলেন তাঁর ছেলে।
প্রতিবেশী এক যুবক জানান, প্রশান্তের মাধ্যমে স্থানীয় এক ব্যক্তি সানমার্গ সংস্থায় দু’লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। সেই আমানতকারীর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাই সপ্তাহখানেক ধরে তিনি প্রশান্তের কাছে এসে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছিলেন। এ দিন ওই ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত প্রশান্ত সেই টাকা জোগাড় করতে পারেননি। সেই কারণেই হয়তো আত্মঘাতী হয়েছেন।
বিশাখা হালদার নামে বেদবেড়িয়া স্টেশনের এক ঠান্ডা পানীয় বিক্রেতা বলেন, “রোজ সারদার অ্যাকাউন্টে ৮০ টাকা রাখতাম। প্রশান্তের কাছেই সব কাগজপত্র থাকত। এক মাস পরেই টাকা সুদে-আসলে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। প্রশান্ত নেই, আর টাকা পাওয়া যাবে না।”
প্রশান্তের বাবা রেলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। তাঁর দুই ছেলে, তিন মেয়ে। গোপালবাবু বলেন, “কোনও মতে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। ছেলেদের জন্য কিছুই করতে পারিনি। ওরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে।”
পারিবারিক সূত্রের খবর, প্রশান্ত নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলেন। সংসারের হাল ফেরাতে তিনি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। পরে অর্থ লগ্নি সংস্থার এজেন্টের কাজ শুরু করেন। তাঁর স্ত্রী ও দু’টি সন্তান রয়েছে। প্রশান্তের দাদা কর্ণ বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.