কংগ্রেস ও তৃণমূল দু’দলের জেলা নেতৃত্বই নিচুতলার নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন, কোনও অবস্থাতেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় পঞ্চায়েত ভোটে জোট বা সমঝোতা করা যাবে না। তা সত্ত্বেও হাবরা-২ ব্লকের বেড়াবেড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’দলের মধ্যে আসন সমঝোতা আটকানো গেল না। যদিও দু’দলের তরফেই দাবি করা হয়েছে, তারা বহু খুঁজেও মনোনয়ন জমা দেওয়ার মতো প্রার্থী খুঁজে পাননি। যদিও রাজনৈতিক মহল মনে করছে, প্রার্থী না পাওয়ার বিষয়টি নেহাতই অজুহাত।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩ সালের নির্বাচনে ১৪টি আসনের ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূল একটি আসনে প্রার্থী দিয়ে সেটিতেই জয়লাভ করেছিল। কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছিল ১৩টি আসনে। সবকটিতেই জয়লাভ করে তারা। সে বারও নিচুতলায় আসন সমঝোতা হয়েছিল। কিন্তু এ বার প্রেক্ষাপট অন্য রকম। কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে দূরত্ব এখন বেড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি এ বার পঞ্চায়েতেও আসন সংখ্যা ১৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭টি। তা সত্ত্বেও কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ১০টি আসনে এবং তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছে ১১টি আসনে। এর মধ্যে কংগ্রেস যে ১০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তার মধ্যে ৭টি আসনে তৃণমূল প্রার্থী দেয়নি। আবার, তৃণমূল যে ১১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তার মধ্যে ৬টি আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেয়নি। |
কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতার কথা উড়িয়ে দিয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায়। তিনি বলেন, “আপ্রাণ চেষ্টা করেও সব আসনের জন্য প্রার্থী খুঁজে পাইনি। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরেছি। কিন্তু প্রার্থী হতে রাজি হননি অনেকেই।” জেলা তৃণমূল সভাপতি নির্মল ঘোষের অবশ্য দাবি, “নানা কারণে সব আসনে প্রার্থী দেওয়া যায়নি। তবে আমাদের কিছু প্রার্থী নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়েছেন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেড়াবেড়ি এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেস প্রভাবিত। লোকসভায় ও বিধানসভায় এখানকার বামবিরোধী মানুষ তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেন। কিন্তু পঞ্চায়েতে এখানকার মানুষ আসন ভাগাভাগি করেন। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্যসমীর মুখোপাধ্যায় আসন সমঝোতার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “কংগ্রেসের একাংশ তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। শাসক দলের প্রতি আকর্ষণ ও নানা প্রলোভনের কারণে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু প্রার্থী খুঁজে পাইনি।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি দেবী ঘোষালও বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, “পঞ্চায়েতে লড়াই করার মতো প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যায়নি।
দু’দলের পক্ষ থেকেই দাবি করা হয়েছে, যে এলাকায় যার প্রভাব বেশি, গ্রামের মানুষ সেই দলের লোককেই প্রার্থী করে দিয়েছেন। জোট নিয়ে কোনও আলোচনাও হয়নি। কংগ্রেস নেতা বিষ্ণু ঘোষ ওই এলাকায় ২০ বছর ধরে প্রধান থাকায় এলাকায় কংগ্রেসের প্রাধান্য ছিল। সম্প্রতি তিনি মারা যাওয়ায় কংগ্রেস কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির তিনটি আসনের মধ্যে দু’টিতে তৃণমূল এবং কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে। |