ভোটের ময়দানে যুযুধান মামা-ভাগ্নে।
চাকদহের তাতলা-১ পঞ্চায়েতের একটি বুথে মুখোমুখি মামা মুক্তিপ্রশান্ত দে কংগ্রেসের প্রতীকে ও ভাগ্নে শ্যামল লস্কর তৃণমূলের ঘাসফুল প্রতীকে ভোট-যুদ্ধে নেমেছেন। ওই আসনে সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা একেবারে মামা-ভাগ্নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ মামা। ভাগ্নেও বলছেন, “মামা তো কী হয়েছে! ভোটের উঠোনে ও সব মানা যাবে না।” দু’জনেই জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত। ভোটাররাও তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন মামা-ভাগ্নের এই দ্বৈরথ।
চাকদহের ওই পঞ্চায়েত বরাবরের কংগ্রেসের শক্ত ঘাটি। গত বছর কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট হয়েছিল। আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল কংগ্রেসকে। প্রার্থী হন শ্যামলবাবুর স্ত্রী দোলনচাঁপা নস্কর। তিনি জিতেছিলেন। তখন ছিল মামা-ভাগ্নের মধুচন্দ্রিমা। দু’জনেই ছিলেন একই দলের সমর্থক। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টেছে। |
মামা মুক্তিপ্রশান্ত দে ও ভাগ্নে শ্যামল লস্কর। —নিজস্ব চিত্র। |
শ্যামলবাবু ভিড়েছেন শাসকদলে। মামা মুক্তিবাবু রয়েছেন নিজের পূর্বের অবস্থানেই। কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট হয়নি। তাই উভয়েই আলাদা ভাবে লড়ছেন। মুক্তিপ্রশান্তবাবু বলেন, “এই এলাকায় কংগ্রেসের ভিত যথেষ্ট শক্ত। তাই আমার জয় নিশ্চিত।” অন্য দিকে ভাগ্নে শ্যামলবাবুর বক্তব্য, “এই এলাকায় সিপিএম কখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। এ বার মামা সিপিএমের প্রচ্ছন্ন মদতে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে লড়ছেন। ফলে এলাকায় আবার সিপিএম হানা দিতে পারে। তাই ভোটে দাঁড়ালাম না।”
মুক্তিবাবু অবশ্য সিপিএমের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। দুই নিকটাত্মীয়ের এই লড়াই কিন্তু দু’জনের পরিবারিক সম্পর্কে কিঞ্চিত হলেও প্রভাব ফেলেছে। কিশোর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন ভাগ্নে শ্যামল লস্কর। তারপর বড় মামা মুক্তিপ্রশান্ত দে-র সাহায্যে তাঁর বড় হয়ে ওঠা। এই পরিস্থিতিতে শ্যামলবাবুর মা অশীতিপর অনিলাবালা লস্কর পড়েছেন মহা ফাঁপরে। বয়সের ভয়ে কাঁপা গলায় বলছেন, “মামা-ভাগ্নের এই লড়াই না হলেই ভাল হত।’’ তবে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমে দুই প্রার্থীর অবশ্য অতশত ভাবার সময় নেই। দু’জনেই ভাবছেন জয় তো হাতের মুঠোয়! |