চার বছর পরেও ইংরেজবাজার পুরসভা স্থায়ী ভাগাড় তৈরি করতে পারেনি। অস্থায়ী ভাগাড়ে এলাকার বাসিন্দাদের বাধায় ময়লা ফেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার জেরে গত চার দিন ধরে শহরের জঞ্জাল অপসারণ বন্ধ রয়েছে। শহর জুড়ে তৈরি হয়েছে আবর্জনার ছোট বড় স্তূপ। এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। স্থায়ী ভাগাড় না থাকায় এই সমস্যার সূত্রপাত বলে জানায় ইংরেজবাজার পুরসভা। শহরে প্রতিদিনের জঞ্জাল কখনও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের নয়নজুলিতে, কখনও রথবাড়ি পুকুরে বা সাহাপুর, নূনবহি, কখনও বা সুসতানির মোড়ের কাছে নিচু জমিতে ফেলে পুর কর্তৃপক্ষ। ওই এলাকাগুলিতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়তেই বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে জঞ্জাল ফেলায় বাধা দিতে শুরু করায় চার দিন ধরে ময়লা অপসারণ বন্ধ রেখেছে পুরসভা। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় জঞ্জালের স্তূপ জমতে শুরু করেছে। পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় ক্ষুদ্ধ শহরের বাসিন্দারাও। |
শহরের বিভিন্ন পাড়ায় এ ভাবেই যাতায়াত করতে হয় সেখানকার
বাসিন্দাদের। ইংরেজবাজারে মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি। |
পুরসভার চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেছেন, “স্থায়ী ভাগাড় তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। যেখানেই স্থায়ী ভাগাড় তৈরির জন্য জমি বাছা হচ্ছে, সেখানেই কিছু ব্যক্তি স্থানীয় বাসিন্দাদের উসকে দিয়ে জমি কিনতে বাধা দিচ্ছে। তিনটি জমি পছন্দ করার পরেও সেই জমি কিনতে পারি নি। স্থায়ী ভাগাড়ের জন্য নতুন করে দুটি জায়গা দেখা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের পরই ওই জায়গা পুরসভা কিনে স্থায়ী ভাগাড় তৈরি করবে।”
ইংরেজবাজার পুরসভার বিরোধী দলের নেতা সিপিএমের কাউন্সিলার শুভদীপ সান্যাল বলেন, “স্থায়ী ভাগাড় তৈরি নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যানের কোনএ সদিচ্ছা নেই। বৈঠকে যখনই ভাগাড় নিয়ে প্রশ্ন তুলি চেয়ারম্যান শুধু আশ্বাস দেন। গত চারদিন ধরে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ। সমস্যা সমাধানে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার প্রস্তাব দিয়েছি।”
মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক উজ্জল সাহা বলেন, “শহরে বড় সমস্যা জঞ্জাল। যেখানে সেখানে জঞ্জাল ফেলার ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। জঞ্জাল সাফাই না হওয়ায় পুর বাজারগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। জঞ্জাল সমস্যা সমাধানে পুরসভার উচিত নাগরিক কনভেনশন ডাকা।” অস্থায়ী ভাগাড় তথা সাহাপুর, রথবাড়ি পুকুর লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, “জঞ্জাল ফেলার কোনও পরিকাঠামো নেই, তবু দিনের পর দিন পুরসভা ময়লা ফেলায় পূতিগন্ধময় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। মশা মাছি বেড়েছে। রোগও ছড়াচ্ছে। পুরসভাকে এলাকায় জঞ্জাল ফেলতে দেব না।” ইংরেজবাজার পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি দিন শহর থেকে ২২০ থেকে ২৩০ টন জঞ্জাল সংগ্রহ হয়।
|