অফিস বন্ধ করার কিছুক্ষণ আগেই দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে পড়েছিল চার অপরিচিত যুবক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভিতরে থাকা দুই কর্মীর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে নগদ কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় তারা। প্রমাণ লোপাটের জন্য সঙ্গে নিয়ে যায় সিসিটিভি-র সিপিইউ-টিও। সোমবার রাতে, স্ট্র্যান্ড রোডের একটি বহুতলের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ৪০ নম্বর স্ট্র্যান্ড রোডে ‘মডেল হাউস’ নামে ওই বহুতলের পাঁচতলায় একটি বাণিজ্যিক সংস্থার অফিস। আগে ওই সংস্থাটির অফিস ছিল ব্রেবোর্ন রোডে। এক মাস আগে সেটি ওই বহুতলে স্থানান্তরিত হয়েছে। ওই বহুতলে আরও অনেকগুলি বেসরকারি সংস্থার অফিস আছে। নীচে রয়েছে একটি বাজার। সোমবার রাত সওয়া ৮টা নাগাদ অধিকাংশ অফিস বন্ধ হয়ে গেলেও ওই বাণিজ্যিক সংস্থাটি খোলা ছিল। অফিসে ছিলেন কৃষ্ণ নামে এক পিওন এবং সংস্থার এক অধিকর্তা পীযূষ বাগলা। |
ঘটনাস্থলে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র |
পীযূষবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, তাঁরা যখন অফিস বন্ধের তোড়জোড় করছেন, তখন আচমকাই জনা চারেক যুবক মুখে কাপড় বাঁধা অবস্থায় হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে। ঢুকেই তারা পীযূষবাবুর কপালে রিভলভার ঠেকিয়ে টাকা দাবি করে। ওই দিনই দুপুরে দেড় লক্ষ টাকা পেয়েছিল ওই সংস্থাটি। কপালে রিভলভার ঠেকানোর পরে পীযূষবাবু আলমারি থেকে দেড় লক্ষ টাকা বার করে ডাকাতদের হাতে দেন। পীযূষবাবুর অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তাঁর এবং কৃষ্ণর মোবাইল কেড়ে নেয়। এর পরে দু’জনের হাত বেঁধে সিসিটিভি-র সিপিইউ খুলে নিয়ে চম্পট দেয়। কাউকে ঘটনার কথা জানালে পীযূষবাবু এবং কৃষ্ণকে প্রাণে মেরে দেওয়ারও হুমকি দেয় তারা।
ঘটনার কিছুক্ষণ পরে নিজেরাই বাঁধন খুলে অফিস বন্ধ করে নেমে আসেন পীযূষবাবুরা। তাঁদেরই অন্য একটি অফিসে গিয়ে পুরো বিষয়টি জানান। বড়বাজার থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। পীযূষবাবু পুলিশকে জানান, দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই বাংলায় কথা বলছিল। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সোমবার দুপুরে অমিত সিংহ নামে সংস্থারই এক প্রাক্তন কর্মী ওই অফিসে এসেছিলেন। ঘটনায় তিনি জড়িত থাকতে পারেন সন্দেহ করে পুলিশ হুগলির বৈদ্যবাটী থেকে তাঁকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুলিশের ডাকাতি দমন শাখার অফিসারেরা। তাঁরা ওই বহুতলের নিরাপত্তারক্ষী-সহ কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আঙুলের ছাপও সংগ্রহ করেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সংস্থার পরিচিত কেউ এই ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত। কারণ, কোন সিপিইউ-তে সিসিটিভি-র ছবি মজুত হচ্ছে, তা বাইরের লোকের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। |