২১ জুলাই কমিশনে সাক্ষ্য
সচিব মণীশের উক্তি এড়ালেন মন্ত্রী মণীশ
খন মণীশ গুপ্ত ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। সেই সময় তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠিতে লিখেছিলেন, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই বিনা প্ররোচনায় পুলিশের গুলি চালানোর অভিযোগ সত্য নয়।
এখন মণীশ গুপ্ত রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী। মঙ্গলবার বিচার বিভাগীয় কমিশনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি বললেন, “ওটা আমার মত ছিল না। ওই মতামত ছিল তৎকালীন রাজ্য সরকারের।” সেই সঙ্গেই মণীশবাবু জানালেন, তিনি মেয়ো রোডে পুলিশের গুলি চালানো সমর্থন করেন না। বরং গুলি চালিয়ে পুলিশ অন্যায় করেছে বলে তিনি মনে করেন।
বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় এ দিন মণীশবাবুকে জানান, পুলিশের গুলি চালানোর প্রতিবাদ জানিয়ে এবং মহাকরণ ও লালবাজারে তাঁর উপরে অন্যায় ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখনকার প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিংহ রাওকে চিঠি দিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একাধিক বার রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে জানতে চায়, ওই অভিযোগ সত্য না মিথ্যা। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে মণীশবাবু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে যে-চিঠি দিয়েছিলেন, সেটি এ দিন তাঁকে দেখান কমিশনের চেয়ারম্যান। মণীশবাবু জানান, ওই চিঠি তাঁরই লেখা। সেই চিঠিতেই রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব লিখেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ সত্য নয়।
বিচার বিভাগীয় কমিশনে বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। মঙ্গলবার।—নিজস্ব চিত্র
পুলিশের গুলিতে আহতদের হাসপাতালে দেখতে সেই সময় কলকাতায় এসেছিলেন কেন্দ্রের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এস বি চহ্বাণ। সেই তথ্যের উল্লেখ করে কমিশন মণীশবাবুর কাছে জানতে চায়, পুলিশের গুলি চালানোর ব্যাপারে তখনকার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনও বৈঠক হয়েছিল কি না এবং স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে তিনি আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন কি না। মণীশবাবু বলেন, তিনি চহ্বাণের সঙ্গে তখন কোনও বৈঠক করেননি। আহতদের দেখতে হাসপাতালেও যাননি।
কলকাতা পুলিশের শীর্ষস্থানীয় দুই কর্তা পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের দু’টি তদন্ত করেছিলেন। স্বরাষ্ট্রসচিব থাকাকালীন সেই তদন্তের বিষয়ে তিনি অবহিত ছিলেন কি না, কমিশনের চেয়ারম্যান এ দিন মণীশবাবুর কাছে তা জানতে চান। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, “সেই তদন্তের কিছুই আমি দেখিনি।”
মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র গত ৬ ফেব্রুয়ারি কমিশনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে একটি হলফনামার প্রতিলিপি দাখিল করেন। ’৯৩ সালের ২ অগস্ট সেই হলফনামা কলকাতা হাইকোর্টে জমা দিয়েছিলেন তদানীন্তন স্বরাষ্ট্রসচিব মণীশবাবু। তাতে বলা হয়েছিল, ’৯৩-এর ২১ জুলাই ধর্মতলায় যুব কংগ্রেসের সমাবেশে বহু সশস্ত্র সমাজবিরোধী জড়ো হয়েছিল। তারাই পুলিশকে লক্ষ করে বোমা-গুলি ছোড়ে। ওই ঘটনায় বহু পুলিশ এবং সাধারণ নাগরিক জখম হন। কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার তুষার তালুকদারের তৈরি রিপোর্টের ভিত্তিতেই হাইকোর্টে হলফনামা জমা দেন মণীশবাবু।
কলকাতা পুলিশের শীর্ষস্থানীয় দুই কর্তার এগজিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত রিপোর্ট মহাকরণ ও লালবাজার থেকে চেয়ে পাঠিয়েছে কমিশন। কিন্তু দু’জায়গা থেকেই কমিশনকে বলা হয়েছে, ওই গুরুত্বপূর্ণ নথির হদিস মিলছে না। কমিশনের চেয়ারম্যান এ দিন এই ব্যাপারে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিবের বক্তব্য জানতে চান। মণীশবাবু বলেন, “ঘটনার পরে ২০ বছর কেটে গিয়েছে। এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” চেয়ারম্যান তাঁর কাছে জানতে চান, পুলিশ এবং প্রশাসনের সর্বোচ্চ দু’টি জায়গা থেকে এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া না-গেলে তার দায় কার? মণীশবাবু বলেন, “বিভাগীয় প্রধানদের উচিত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষণ করা।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.