তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে হলে বাম ঐক্য বজায় রাখতে হবে। সেই ঐক্য বজায় রাখতেই দুবরাজপুর বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের চার নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির আসনটি ফরওয়ার্ড ব্লককে ছেড়ে দিয়েছিল সিপিএম। প্রার্থী হয়েছেন বাসন্তী মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ওই আসনেই পরে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান মালতী ঘোষ।
|
নির্দল প্রার্থী মালতী ঘোষ। |
|
ফব প্রার্থী
বাসন্তী মুখোপাধ্যায়। |
স্বাভাবিক ভাবে অস্বস্তিতে বামফ্রন্ট। অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, সরকারি ভাবে ঘোষণা না হলেও
যেখানে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলাজুড়ে বহু আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল, সেখানে এক জোট হয়ে লড়ার সুযোগ পেয়েও শুধুমাত্র সমন্বয়ের অভাবে নিজেদের মধ্যে ভোট ভাগাভাগিতে উক্ত আসনটিতে অতিরিক্ত সুবিধা না পেয়ে যায় তৃণমূল। গত পঞ্চায়ত নির্বাচনে এই আসন থেকে জিতেই দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন সিপিএমের প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়। বালিজু়ড়ি পঞ্চায়েত এলাকার, ৬টি (আগয়া, কাপাসতোড়, বালিজুড়ি, বনকাটি, মেজে, শল্যাপাহাড়) গ্রাম মিলিয়ে ওই পঞ্চায়েত সমিতির আসনে সিপিএম দলের একটা বড়সড় সমর্থন থাকলেও বাম ঐক্যকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। আর সেই জন্যই দলের টিকিট পাননি মালতী দেবী।
সংঘাতটা সেখানেই শুরু। টিকিট না পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সিপিএম প্রধান মালতী ঘোষ। তিনি বলেন, “গত পাঁচ বছর ধরে মানুষের জন্য কাজ করেছি। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত চালাতে বহু ঝড় ঝাপটা সহ্য করেও যদি দলের টিকিট না পাওয়া যায় তা হলে অবশ্যই খারাপ লাগে। আর মানুষের কাজ করার জন্য এবং তাঁদের সমর্থনে নির্দলে দাঁড়িয়েছি এবং জেতার ব্যাপারেও আশাবাদী।” সিপিএমের দুবরাজপুরের জোনাল কমিটির সম্পাদক বলরাম ঘোষ অবশ্য মুখে বলছেন, “প্রধান মালতি ঘোষ লড়লেও খুব একটা অসুবিধা হবে না। দল যাঁকে প্রতীক দিয়েছে তিনিই সুবিধা পাবেন।” তাঁর সংযোজন, “মনোনয়নপত্র না তোলায় দলের তরফে পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়ে দিন কয়েক আগেই ওঁকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যেহেতু উনি দলের সদস্য নন তাই বহিস্কারের প্রশ্ন নেই।”
যদিও বলরামবাবুর মতো এতো সহজে বিষয়টি নিচ্ছেন না দুবরাজপুরের ফব বিধায়ক বিজয় বাগদি। তিনি বলেন, “ওঁকে বহুবার না দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সেই অনুরোধ উনি রাখেননি। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সমস্যা হবে এবং ভোটভাগাভাগির সুবিধা পাবে শাসকদল।” তবে এতো কিছু নিয়ে ভাবতে রাজি নন ফব-র টিকিটে দাঁড়ানো বাসন্তীদেবী। তাঁর কথায়, “দল যখন সঙ্গে রয়েছে আমিই জিতব বলে মনে করি।” আর যখন নিজেদেরকে নিয়ে কিঞ্চিত বিড়ম্বনায় বামফ্রন্ট তখন ওই আসনে দাঁড়ানো তৃণমূল প্রার্থী সমাপ্তি মুখোপাধ্যায় সরাসরি বলছেন, “হ্যাঁ ওই দ্বন্দ্বটাই আমাকে জেতাবে।” |