পঞ্চায়েত ভোটে একটি বুথে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছেন দাঁইহাট চক্রের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক শেখ আলাউদ্দিন। মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামের উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক তরুণকুমার হালদার সেখানে প্রথম পোলিং অফিসার।
কাটোয়ার ভারতী ভবন স্কুলের শিক্ষক মৃন্ময় সাহা এত দিন যাবত নির্বাচনের বুথে প্রিসাইডিং অফিসারের অফিসারের দায়িত্ব সামলেছেন। এ বার তিনি পেয়েছেন প্রথম পোলিং অফিসারের দায়িত্ব। কেতুগ্রামের কাঁটারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক মহম্মদ কামরুজ্জামান আবার প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়ে বেশ উদ্বেগে।
এমন উদাহরণ এখানেই শেষ নয়। এ বার ভোটকর্মীর দায়িত্ব বণ্টনে এরকম নমুনা ভুরিভুরি। যার ফলস্বরূপ, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের ‘তত্ত্বাবধানে’ কাজ করতে হবে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষককে। যা নিয়ে খানিক আপত্তি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের, কিছুটা অস্বস্তিতে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা। অনেক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক আবার বলছেন, “আগে প্রাথমিক স্কুলে নিযুক্ত হতেন মাধ্যমিক উত্তীর্ণেরা। এখন উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা লোকজনকে নিয়োগ করা হয়। আমাদের পক্ষে কি প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব সামলানো সম্ভব!”
এই প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার কাটোয়া মহকুমাশাসকের অফিসে ভিড় জমান প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা। কাটোয়ার ইলেকশন ওসি সুরেশ রানোর কাছে আবেদন করেন, প্রথম পোলিং অফিসার হিসেবে কাজ করতে চান তাঁরা। কাটোয়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাকেও ভোটের কাজে নেওয়া হয়েছিল। আমার কলেজের দুই গ্রন্থাগারিক আবার প্রথম পোলিং অফিসার হয়েছেন!” কাটোয়ার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনঙ্গমোহন দাস বলেন, “প্রথম পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছেন বর্ষীয়ান শিক্ষকেরা। প্রিসাইডিং অফিসার হওয়া প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকদের তো অস্বস্তি হবেই।”
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনও। তাদের কাটোয়ার সভাপতি মহাদেব মণ্ডল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রিসাইডিং অফিসার করার জন্য মঙ্গলবার মহকুমাশাসকের দফতরে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, “এ ভাবে ভোটের দায়িত্ব বণ্টন হলে বুথের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকবে না। কেউ কারও কথা শুনছেন না, এই পরিস্থিতি হতে পারে।” কংগ্রেস নিয়ন্ত্রণাধীন শিক্ষক সংগঠনের নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায়ের মত, “অস্বস্তিকর পরিবেশ হতে পারে।”
নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “কাকে প্রিসাইডিং অফিসার বা পোলিং অফিসার করা হবে, তার কোনও বাঁধাধরা নিয়ম নেই। তবে পদাধিকার দেখে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগের প্রচলন রয়েছে।” এ বার ‘ব্যতিক্রম’ হল কেন, তার ব্যাখ্যা মেলেনি। কাটোয়ার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তথা ইলেকশন ওসি সুরেশ রানোর অবশ্য আশ্বাস, “সংশ্লিষ্ট নির্বাচন আধিকারিক তথা বিডিও-দের কাছে আবেদন করলে সমস্যা মিটে যাবে।” |