তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক বাতিল হয়ে গেল। আজ, মঙ্গলবার ও আগামিকাল বুধবার ঢাকায় এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী হরিশ রাওয়াতের অন্য জরুরি কাজ পড়ে যাওয়ায় তিনি ঢাকা সফর বাতিল করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটের কারণে বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠক বাতিলের খবর দিয়ে জলসম্পদ মন্ত্রকের সিনিয়র জয়েন্ট সেক্রেটারি ১ (গঙ্গা) টি এস মেহরার চিঠি সোমবারই মহাকরণে এসে পৌঁছয়। সেচমন্ত্রী বলেন, “বৈঠকে যেতে পারব না বলে আমি দিল্লিকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিশেষ কাজ রয়েছে বলে তিনিও সফর বাতিল করেছেন।” তবে দু’দেশের সুবিধা অনুযায়ী বৈঠকের দিন স্থির করে তা শীঘ্রই রাজ্যকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মেহরা।
মহাকরণে সূত্রে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এড়িয়ে কেন্দ্র বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি করতে চায় না বলেই রাওয়াতের সফর বাতিল করা হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে ঢাকাকে কোনও কথা দিতে চায় না কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে তিস্তা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার পরে বেঁকে বসেছিলেন মমতা। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে জল দিতে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু তা কোনও অবস্থাতেই পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ বিঘ্নিত করে নয়। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে সে বার ঢাকা সফরেও যাননি তিনি। ফলে চুক্তি সই না-করেই দেশে ফিরে আসেন মনমোহন। তার পর থেকেই মমতাকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু তিস্তা প্রশ্নে কোনও অগ্রগতি হয়নি। এখন পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তিস্তা প্রসঙ্গ নিয়ে মমতা নাড়াচাড়া করতে চাইছেন না বলেই মহাকরণ সূত্রে খবর। তাঁর ধারণা, সে ক্ষেত্রে রাজ্যবাসীর কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। যা তাঁর দলের পক্ষে রাজনৈতিক ভাবে ক্ষতিকর হবে। সেই কারণেই সেচমন্ত্রীকে ঢাকার বৈঠকে না-পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল
রাজ্য সরকার। ভারত-বাংলাদেশ নদী কমিশনের আগের বৈঠকে স্থির হয়েছিল, সারা বছর তিস্তা দিয়ে কত জল বয়ে যায় তা যৌথ ভাবে খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হবে। সেই বিষয় নিয়ে এ বারের বৈঠকে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
|