আলিপুরদুয়ারের পলাশতলি গ্রামে কংগ্রেস নেতা সূর্যমোহন দেবনাথের খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে শুক্রবার রাতে। এই নিয়ে খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, দুই ধৃতের নাম জগন্নাথ মোদক ও জীতেন মোদক। আগে গ্রেফতার হন খগেন দেবনাথ। তিনজনই সিপিএম কর্মী বলে কংগ্রেসের দাবি। তবে দ্রুত সব অভিযুক্তদের ধরা না হলে জোরদার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে কংগ্রেস। পাশাপাশি, আলিপুরদুয়ার থানার আইসি বদলির দাবিও তুলেছে কংগ্রেস। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে ধরা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাসি চলছে। পলাশতলি বাজারে পুলিশ পিকেট রয়েছে।”
গত বুধবার রাতে পূর্ব বড়চৌকি গ্রামের এক সিপিএমের কর্মীর সপরিবারে দলবদলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় গোলমাল শুরু হয়। গ্রামের কংগ্রেস নেতা সূর্যমোহনবাবুকে বল্লম এবং ভোজালি দিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় একদল সিপিএম কর্মী সমর্থকের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, কংগ্রেসের এলাকার পঞ্চায়েত প্রার্থী সুভাষ দেবনাথ ছাড়াও কংগ্রেস কর্মী সুজিত বর্মন, স্বপন বর্মন ও আলম মিঁয়া গুরুতর জখম হন। এর মধ্যে স্বপন বর্মন কোচবিহারে ও বাকিরা আলিপুরদূয়ার মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় ২৯ জন সিপিএম কর্মী সমর্থকের বিরুদ্ধে আলিপুরদুয়ার থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। তবে সিপিএমের চাপরেরপাড় লোকাল কমিটির সম্পাদক রূপধন রায়তিনি বলেন, “ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও ব্যাপার নেই। কংগ্রেস ভোটের আগে রাজনীতি করছে।”
প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বরঞ্জন সরকার জানান, পূর্ব বড়চৌকি গ্রামে সিপিএমের একাধিপত্য ছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম এলাকায় দুই ভোটে জেতে। তার আগের দুটি নির্বাচনে নিহত সূর্যবাবুর সাংগঠনিক শক্তিতে কংগ্রেসের প্রার্থীরা জয়ী হন। এবার সূর্যবাবুর উদ্যোগেই ২০টি সিপিএম পরিবার কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে। তাই পরিকল্পিতভাবে ওই নেতাকে খুন করা হয়েছে। নিহত কংগ্রেস নেতার ছেলে শুভেন্দু জানালেন, “বাবা সকলের বিপদে ঝাপিয়ে পড়তেন। এমন একজন মানুষকে খুন করা হল বাবতেই পারছি না। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” খুনের ঘটনার পর দুই পার হলেও গোটা গ্রাম থমথমে। শনিবার কোনও দোকানপাট খোলেনি। এলাকায় কোনও দলের ভোটের প্রচার চোখে পড়েনি। |