নতুন করে সংস্থার হাল ধরার ১৫ দিনের মাথায় ইনফোসিসকে চাঙ্গা করার পথনির্দেশ বাতলে দিলেন নারায়ণমূর্তি।
গত দু’বছর ধরে ক্রমেই বাজার হারাতে থাকা ইনফোসিসের এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান হিসেবে ফিরে এসে প্রতিষ্ঠাতা শনিবার জানিয়ে দিলেন, ‘কাঙ্ক্ষিত’ ইনফোসিস গড়ে তুলতে সময় লাগবে কমপক্ষে ৩৬ মাস। এবং, সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে ‘কষ্ট’ হলেও কিছু কড়া সিদ্ধান্ত যে নিতে হবে, সে কথা জানাতে ভোলেননি নারায়ণমূর্তি। অবসর থেকে গত ১ জুন সংস্থায় ফিরে আসার পর এ দিন সংস্থার ৩২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারদের মুখোমুখি হয়ে এই ভাবেই সংস্থার ভিত নতুন করে গড়ার সময়সীমা বেঁধে দেন তিনি। তাঁর কথায়, “সবচেয়ে দক্ষ পরিচালকদের সম্পূর্ণ আনুগত্য পেলেও ৩৬ মাস সময় লাগবেই। চ্যালেঞ্জ নিতে হবে সাহসের সঙ্গে। কাজটিও নিঃসন্দেহে কঠিন।” তিন বছরে এই দুর্গম পথ পেরোনোর জন্য শেয়ারহোল্ডারদের সমর্থন ও উৎসাহ চেয়েছেন নারায়ণমূর্তি। তাঁর বিশ্বাস যাত্রা শেষে পুরস্কার মিলবেই। |
প্রসঙ্গত, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প সূত্রের খবর, দু’বছর ধরে কমছিল ইনফোসিসের মুনাফা বৃদ্ধির হার। সংস্থার পূর্বাভাসের (আগামী দিনে মুনাফা কেমন হবে, বরাত কেমন জুটবে ইত্যাদি) দিকে বরাবর তাকিয়ে থাকে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ও শেয়ার বাজার। কিন্তু সম্প্রতি নিজেদের পূর্বাভাস মেলাতেই হিমসিম খাচ্ছিল তারা। বাজারের দখল ছিনিয়ে নিচ্ছিল টিসিএস, কগনিজ্যান্ট, উইপ্রো, এইচ সি এল টেকনোলজিসের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীরা। এর প্রভাব পড়ছিল শেয়ার দরে। গত দু’বছরে শেয়ার দর পড়েছে ১৫%। মন্দা না-কাটায় আমেরিকা-ইউরোপের বরাত কমার সমস্যা তো আছেই।
সংস্থার আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে তিনটি উৎসের কথা এ দিন উল্লেখ করেন নারায়ণমূর্তি। প্রথমটির আওতায় রয়েছে উপদেষ্টার ভূমিকা ও প্রযুক্তি ভিত্তিক সমাধান বাতলে দেওয়া। দ্বিতীয়টিতে আছে মেধা-সম্পদ ভিত্তিক সমাধানসূত্র তৈরি করা। আয়ের তৃতীয় পথটি হল বড়সড় আউটসোর্সিং প্রকল্প হাতে নেওয়া। স্বল্প মেয়াদে সংস্থার প্রাণ ফেরাতে যাতে জোর দিচ্ছেন তিনি।
এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় খরচ কাটছাঁট করার কথা বলেছেন নারায়ণমূর্তি। এই ভাবে বাঁচানো তহবিল সংস্থাতেই লগ্নি করা হবে। প্রায় নিখুঁত পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য কমীর্দের উৎকর্ষ বাড়াতে চান তিনি। সফটওয়্যার উদ্ভাবনে দক্ষতা বাড়িয়ে গ্রাহকদের উন্নত পরিষেবা দিতে তাঁর ‘কাঙ্ক্ষিত’ ইনফোসিস কৃতসংকল্প বলে জানান সংস্থায় ‘নতুন’ কর্ণধার। সেই পথ ধরেই সংস্থার মুনাফাও বেশি হারে বাড়বে বলে বিশ্বাস তাঁর।
|