|
|
|
|
 |
প্রায় সব আসনেই লড়াইয়ে বিরোধীরা |
তৃণমূলের ভরা মরসুমে
দাসপুর ফের ব্যতিক্রম
অভিজিৎ চক্রবর্তী • দাসপুর |
|
আসন্ন ত্রি -স্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে দাসপুরের দু’টি ব্লকের প্রায় প্রতিটি আসনেই প্রার্থী দিল বিরোধী সিপিএম -সহ কংগ্রেস এবং বিজেপি। সিপিএমের একাধিপত্যের সময়েও দাসপুরে প্রার্থী দিতে পেরেছিল বিরোধীরা। শুধু তাই নয়, তখন গোটা জেলার মধ্যে এখানেই একটি পঞ্চায়েত সমিতি ও একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছিল বিরোধী তৃণমূল। এই দাসপুর থেকেই বিধানসভা ভোটেও জিতেছিলেন তৃণমূলের অজিত ভুঁইয়া। ঠিক আগের মতো এ বারেও বিরোধীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সুযোগ মেলায় বোঝা গেল দাসপুর আসলে ব্যতিক্রম।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। প্রায় হাজার খানেক গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হচ্ছে না। তার প্রায় সবই পেয়েছ তৃণমূল। এ ছাড়াও ১৩৩টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে বর্তমান শাসকদল। কিন্তু অন্য চিত্র দাসপুরে। মহকুমার পাঁচটি ব্লকের মধ্যে দাসপুর তৃণমূলের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু সেখানেই সম্মুখ সমর হতে চলেছে সিপিএম -তৃণমূলের।
দাসপুর ২ ব্লকে মোট ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৯৪। তার মধ্যে ১৯৩টি আসনে ও পঞ্চায়েত সমিতির ৩৯টি আসনের সব কটিতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। দাসপুর ১ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬১টি আসন রয়েছে। এখানেও ১৬টি আসন বাদে সব আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। আর, একটি বাদে পঞ্চায়েত সমিতির সব আসনেই ভোট হবে। কিন্তু, মহকুমার বাকি তিনটি ব্লকের চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। যেমন, চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০২টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মাত্র ৪১টিতে ভোট হবে। পঞ্চায়েত সমিতির ১৮টির মধ্যে অর্ধেক, ঠিক ৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। একই চিত্র চন্দ্রকোনা ২ ব্লকেও। ঘাটাল ব্লকে আবার ১২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে অর্ধেকই তৃণমূলের দখলে।
কেন মহকুমার অন্য ব্লকগুলির থেকে দাসপুর আলাদা? তৃণমূল নেতা শ্যাম পাত্রের যুক্তি, “আমাদের দলের সিদ্ধান্তই ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে বিরোধীদের উপর কোনও রকম ফতোয়া জারি চলবে না। আমরা আসলে ওদের মতো নই। এ জন্যই সিপিএম দাসপুরে প্রার্থী দিতে পেরেছে।” তৃণমূলের এই ‘উদারতার’ কথা মানতে নারাজ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুনীল অধিকারী। তাঁর কথায়, “আমরা আমাদের সংগঠনের জোরেই দাসপুরে প্রার্থী দিতে পেরেছি, তৃণমূলের উদারতার জন্য নয়।” এর জেরে মহকুমার চন্দ্রকোনা, ঘাটালে যেখানে রাজনৈতিক তৎপরতা নেই বললেই চলে সেখানে দাসপুরে সম্পূর্ণ অন্য মেজাজ। গ্রামের অলি -গলিতে এখন ভোটের চর্চা। চলছে পথসভা থেকে বাড়ি বাড়ি প্রচার, বুথে বুথে বৈঠক। জোরদার প্রচারে নেমেছে কংগ্রেস, বিজেপিও। আর তাতে কপালে ভাঁজ পড়েছে তৃণমূলেরও। কারণ, এই ব্লকে এমনিতেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল। তার উপর আবার সক্রিয় বিরোধীরাও। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের স্পষ্ট কথা, “ভোট যতই হোক, আমরা দাসপুরের দু’টি ব্লকের তিনটি স্তরেই জয়ী হব।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের বক্তব্য, “আমরা মানুষের কাছে গিয়ে গত দু’বছরে তৃণমূল সরকার কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আর কী করেছে, তা মানুষকে বলছি। মানুষই বুঝে এর জবাব দেবেন।” |
|
|
 |
|
|