উত্তর কলকাতা
শিয়ালদহ উড়ালপুল
হস্তান্তরে জট
লকাতা পুরসভাকে শিয়ালদহ উড়ালপুল হস্তান্তরের বিষয় নিয়ে জট কাটল না। এই উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং কলকাতা পুরসভার মধ্যে চাপানউতোর থেকেই গেল।
উল্টোডাঙার উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তার পরেই শিয়ালদহ উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “পুরসভাকে শিয়ালদহ উড়ালপুল হস্তান্তর করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তাদের জানানোও হয়েছে। উড়ালপুল মেরামতি করার জন্য যে পরিকাঠামোর প্রয়োজন তা কেএমডিএ-র নেই।
পুরসভাকে হস্তান্তর করলে উড়ালপুলটির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব।”
কিন্তু, কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই উড়ালপুলটির কাঠামো ঠিক আছে কি না, কেএমডিএ তা জানানোর পরেই আমরা দায়িত্ব নিতে পারি। উড়ালপুলের কাঠামোর কোনও সমস্যা থাকলে বা মেরামতি প্রয়োজন হলে অর্থের প্রয়োজন। পুরসভার কাছে অত অর্থ নেই। আমরা কেএমডিএ-কে চিঠি দিয়ে ইতিমধ্যেই আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি।”
আশির দশকের প্রথম দিকে মধ্য কলকাতায় যানজট এড়াতেই এই উড়ালপুল নির্মাণ করা হয়। কেএমডিএ এই উড়ালপুল নির্মাণ করে। নামকরণ হয় বিদ্যাপতি সেতু। কেএমডিএ এই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ করত। এই উড়ালপুলের কোনও অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা সারাতে কেএমডিএ-র অনেক সময় লাগে বলে পুরসভার অভিযোগ। পুর-পরিষেবার কথা ভেবে বাধ্য হয়েই পুরসভাকে এই কাজ করতে হয়। পুরসভার সংশ্লিষ্ট বরো-র এলাকা উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ তহবিল থেকেই এই উড়ালপুল সারানোর কাজ করতে হয়।
নিয়মানুযায়ী, কেএমডিএ-র কোনও কাজ করতে গেলে পুরসভাকে কেএমডিএ-র কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। ফলে, কাজেও দেরি হয়। পুরসভার পাঁচ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন অপরাজিতা দাশগুপ্ত বলেন, “এই উড়ালপুল কোথাও ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরসভা থেকেই আমরা মেরামতি করি। পুরসভার অর্থেই কাজ হয়। পুরসভাকে যদি এই উড়ালপুলটি হস্তান্তর করা হয় তা হলে দ্রুত কাজ হবে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগেই মহাত্মা গাঁধী রোডের দিকে এই উড়ালপুলের বেশ কয়েকটি রেলিং ভেঙে গিয়েছিল। উড়ালপুলের নিকাশি পাইপও ভেঙে গিয়েছিল। বৃষ্টিতে সেতু থেকে পথচারীদের গায়ে জল পড়ত। তাই তড়িঘড়ি পুরসভা নিজের অর্থেই মেরামতি করেছে। উড়ালপুলে আলোর সমস্যাও ছিল। পুরসভা সেগুলিও ঠিক করে। নিকাশির কিছু কাজও পুরসভা করেছে।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, গুরুত্বপূর্ণ হল এই সেতুর কাঠামো ঠিক আছে কি না তা পরীক্ষা করা। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পুরসভা এই উড়ালপুলটি পর্যবেক্ষণ করবে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। পুরমন্ত্রী বলেন, “আমি পুরসভার সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে খুব শীঘ্রই আলোচনা করব। পুরসভার অর্থের প্রয়োজন হলে নগরোন্নয়ন দফতর তা বরাদ্দ করবে।”

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.