নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পাল নিজেকে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বলে দাবি করলেন। বৃহস্পতিবার পুর ভবনে বসে এ কথা জানান নান্টুবাবু। তিনি বলেন, “আমি কোন দলে আছি তা নিয়ে বিতর্কের জেরে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার অমরেন্দ্র নাথ সিংহের কাছে আমার অবস্থান জানাতে বলা হয়। সেখানে জানিয়ে দিয়েছি, আমি তৃণমূলেই রয়েছি। আগেও দিদির (তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) হয়ে কাজ করেছি এখনও তাই করছি।”
দলত্যাগ বিরোধী আইনে মেয়র-সহ কংগ্রেসের কাউন্সিলররা নান্টুবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। শুনানিতে নান্টুবাবু কোন দলে রয়েছেন তা জানতে চাওয়া হলে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছিলেন পুর আইন মেনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে তা জানানো হবে। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বলতে কাকে বিষয়টি জানানো হবে রাজ্য সরকারকে তা ঠিক করে দিতে নির্দেশ দেয় আদালত। এর পরেই রাজ্য সরকারের তরফে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারই উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বলে জানিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। সেই মতো ৮ সপ্তাহের মধ্যে নান্টুবাবুকে বিষয়টি জানানোর সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবারই সময় সীমা শেষ হচ্ছে। তার আগে এ দিন নান্টুবাবু এবং পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তকে ডেকে পাঠান বিভাগীয় কমিশনার। সেই মতো তাঁর সঙ্গে দেখা করে নান্টুবাবু জানিয়ে দেন তিনি কোন দলে রয়েছেন। এ দিন উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিভাগীয় কমিশনার আদালতের নির্দেশ মেনে তার রায় জানাবেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তৃণমূল ভবনে বসে কংগ্রেস ছেড়ে ওই দলে যোগের বিষয়টি জানান নান্টুবাবু। মেয়র-সহ কংগ্রেস কাউন্সিলররা দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান আদালতে। চেয়ারম্যানের অপসারণ চেয়ে চেয়ে অনাস্থা আনে বামেরা। এ ব্যাপারে তারা আদালতের দ্বারস্থ হলে বিশেষ সভা ডাকা হয়। ভোটাভুটিতে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত হন নান্টুবাবু। এর পর কংগ্রেস, বাম কাউন্সিলরদের অনুপস্থিতিতে কোরাম ছাড়া মিটিংয়ে পুনরায় নান্টুবাবু তৃণমূলের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচন হলে প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে বাম এবং কংগ্রেস। তারা আলাদা ভাবে আদালতের দ্বারস্থ হন।
এ ব্যাপারে মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন,“কমিশনার সব শুনে সিদ্ধান্ত জানাবেন। এর আগেও নান্টু পালের তৃণমূলের সঙ্গে নানা কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে তথ্য কমিশনারকে দেওয়া হবে।” এই ব্যাপারে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের মহাসচিব কৃষ্ণ পাল বলেন, “নান্টু পাল তৃণমূলে আছেন সেটা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে, বিচারাধীন বিষয়ে কোন মন্তব্য করা উচিত নয়।” অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “যারা স্বার্থের জন্য দলত্যাগ করেন তাঁদের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়াই উচিত।” ডিভিশনাল কমিশনার অমরেন্দ্র নাথ সিং বলেন, “দু’পক্ষের কথা শুনেছি। যথাস্থানে জানাব।”
|