মাওবাদী হামলার আশঙ্কায় বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের আট জন তৃণমূল নেতাকে আগেই ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী দেওয়া হয়েছিল। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তাঁদের মধ্যে চার জনের ‘ওয়াই ক্যাটিগরি’র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করল বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। এঁরা সকলেই খাতড়া মহকুমার বাসিন্দা। পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “খাতড়ার তিন তৃণমূল নেতা শ্যামল সরকার, মানিক মিত্র ও জয়ন্ত মিত্র এবং রানিবাঁধের গৌর টুডুকে ‘ওয়াই ক্যাটিগরি’র নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” |
খাতড়া শহরের বাসিন্দা শ্যামল সরকার ও জয়ন্ত মিত্র তৃণমূলের অন্যতম জেলা সাধারণ সম্পাদক। দলের জেলা সহ-সভাপতি হলেন খাতড়ারই বাসিন্দা মানিক মিত্র। আর রানিবাঁধের বাসিন্দা গৌর টুডু দলের তফসিলি জাতি ও উপজাতি সেলের জেলা সভাপতি। শ্যামলবাবু এ বার জেলা পরিষদে খাতড়ার একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে প্রার্থী হয়েছেন জয়ন্তবাবু। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই চার জনের পাশাপাশি তৃণমূলের সারেঙ্গা ব্লক সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ, রানিবাঁধ ব্লক সভাপতি সুনীল মণ্ডল, রাইপুর ব্লক সভাপতি জগবন্ধু মাহাতো এবং রাইপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা অনিল মাহাতোকে আগেই ব্যক্তিগত দেহরক্ষী দেওয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহলে শাসকদলের প্রথম সারির কয়েক জন নেতার উপরে হামলার আশঙ্কা রয়েছে। গোয়েন্দা দফতরের রিপোর্টের ভিত্তিতে আপাতত ওই চার জনের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাতে ওই নেতাদের বাড়িতে ছ’জন করে সশস্ত্র পুলিশকর্মীকে মোতায়েন রাখা হবে।” |
প্রসঙ্গত, বছর তিনেক আগে শ্যামলবাবু ও ধীরেন্দ্রনাথবাবুকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা। বরাতজোরে দু’জনেই প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। এ ব্যাপারে শ্যামলবাবুর বক্তব্য, “আমাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ-প্রশাসন যা ভাল মনে করছে, তাই করবে। এক্ষেত্রে আমরা কোনও দাবি করিনি।” আর গৌরবাবু বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমি আর আমার স্ত্রী বিভাবতী রাজনীতি করার সুবাদে ‘টার্গেট’ হয়ে গিয়েছি। পুলিশ সেটা জানতে পেরেই আমার নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে।” জেলা পুলিশের এক সূত্রের খবর, ধীরেন্দ্রনাথবাবু, জগবন্ধুবাবু ও অনিলবাবুকে ‘ওয়াই ক্যাটিগরি’র নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। |
ছবি: দেবব্রত দাস ও প্রদীপ মাহাতো। |