ম্যালকম কনের সঙ্গে। টুইটার বিতর্ক করমর্দনে শেষ হলেও ওয়ার্নার কিন্তু বদলাননি। |
অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের মহাকর্তা জেমস সাদারল্যান্ড প্রচণ্ড ক্ষেপে গেছেন যে ওঁর সঙ্গে কথা বলেই বুঝেছি। তবু জানতাম, অ্যাসেজটা ওয়ার্নার খেলতে পারবে। এখনকার মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ওপর দিয়েই শাস্তিটা যাবে। ওকে জরিমানা করার পর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া থেকে আমায় জিজ্ঞেস করা হয়, যদি একটা সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা যায় তা হলে আমি ওয়ার্নারের সঙ্গে মুখোমুখি মিটিয়ে নিতে রাজি আছি কি না? আমি প্রস্তাব দিই, রাজি তো আছিই। তার পর ওয়ার্নারকে আমি একটা ইন্টারভিউ করতে চাই। জানতে চাই এমন অসভ্যতা ও কেন করল? সেই মতো আমরা হ্যান্ডশেক করছি, ক’দিন আগে সিডনিতে ছবিও তোলা হয়। ইন্টারভিউতে ওয়ার্নার ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে, টুইটারে ও কেন এত উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিল। আসলে ওকে নাকি সে দিন ভোররাত সওয়া তিনটের সময় ইন্ডিয়ায় ফোন করে তোলে অস্ট্রেলিয়ার কিছু বন্ধু। বলে, সাংবাদিক রবার্ট ক্র্যাডকের স্পট-ফিক্সিং স্টোরির সঙ্গে তোর ছবি গ্যাছে। মনে হচ্ছে যেন তুই-ও স্পট-ফিক্সিংয়ে জড়িত। শোনামাত্র ওয়ার্নারের মাথাটা গরম হয়ে গিয়েছিল। তার পর ক্র্যাডকের লেখাকে গালাগালি দিতে গিয়ে আমার সঙ্গে টুইটার-সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
ওয়ার্নার আমায় ইন্টারভিউতে বলেছিল, অ্যাসেজ সিরিজের জন্য এত খাটছে যে আট কিলো ওজন কমিয়ে ফেলেছে। টিমের ডায়েটিশিয়ান ওকে নাকি বলেছেন, তুমি হাই-ফ্যাট ডায়েটও মাঝেমধ্যে খেয়ে ফেলতে পারো। কিন্তু কার্বোহাইড্রেটকে জীবন থেকে যথাসম্ভব বর্জন করো। রুটি না, চাল না, পাস্তা না। কেবল গ্রিলড চিকেন আর ফল খেয়ে নাকি গত কয়েক মাস কাটাচ্ছে। ওজন কমার সেটাই রহস্য। আর বলেছিল, অ্যাসেজের জন্য টেকনিক্যালিও তৈরি হচ্ছে। কথা বলেছে ডে’ভিলিয়ার্স আর মাইক হাসির সঙ্গে। দু’জনেই নাকি পরামর্শ দিয়েছেন, ইংল্যান্ডের পরিবেশে যত না খেলবে, তার চেয়ে বেশি বল ছাড়ার জন্য তৈরি থাকো। সব সময় অফস্টাম্প কোথায়, খেয়ালটা তোমার থাকা চাই।
|
বৃহস্পতিবার লন্ডনে সাংবাদিক সম্মেলনে অধিনায়ক ক্লার্কের সঙ্গে। |
‘‘যা করেছি, তার জন্য আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। অস্বীকার করছি না, কিছুটা মদ্যপান করেছিলাম। কিন্তু এটা কোনও অজুহাত নয়। আমি জো-কে এসএমএস পাঠিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। ও আমাকে ক্ষমাও করে দিয়েছে, যার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। তবে এটাও বলছি, আমার কোনও নেশার সমস্যা নেই। আমাকে শুধু এর পর থেকে ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্তটা নিতে হবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমি আর নেই ঠিকই, তবে যাতে দলের কাজে এক শতাংশও লাগতে পারি, সেটা দেখব। আর অ্যাসেজের প্রথম টেস্টে দলে নির্বাচিত হওয়ার জন্য যা করা দরকার, সেটা করব...’’—ডেভিড ওয়ার্নার |
|
এগুলো শুনতে যতই ‘ইম্প্রেসিভ’ হোক, আমি জানি মানসিক সমস্যা দূর না করতে পারলে ওয়ার্নারের কিসস্যু হবে না। টিমে আজ যদি একটা স্টিভ ওয় থাকত, সে ঠিক গড়েপিটে তৈরি করে নিত ওয়ার্নারকে। ক্লার্ক আছে কিন্তু সে তো নিজেই পিঠ নিয়ে ঝামেলায়। ওয়ার্নারের কোনও নিজস্ব কোচ নেই। নেই কোনও মেন্টর। ওকে নিয়ে সমস্যা সে জন্য আরও বেশি। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটমহলে আমরা অনেকেই মনে করছি, পন্টিংকে আদর্শ করুক ওয়ার্নার!
পন্টিংয়েরও তো মদ খাওয়া, শৃঙ্খলা-টৃঙ্খলা নিয়ে গোড়ার দিকে বিস্তর কেস ছিল। আপনাদের কলকাতার হোটেলেই তো এক বার বিশাল কাণ্ড হয়েছিল পন্টিংকে নিয়ে। আজ সেখান থেকে পন্টিং কোথায় গিয়েছে। আজ ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের একজন প্রবাদপুরুষ।
ওয়ার্নারকে লন্ডনের প্রেস কনফারেন্সে বীরত্ব দেখিয়ে প্রেসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। বা মার্জনা চাইলেই শুধু হবে না। সত্যি সত্যি পন্টিং হাইওয়েতে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পারবে কি না? বলতে পারছি না...
|