সমস্ত আমানতকারীর টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলিকে সময়সীমা বেঁধে দিল ত্রিপুরা সরকার। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রোজ ভ্যালী-সহ সব সংস্থাকে এই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। অন্যথায় তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলেও রাজ্য হুঁশিয়ারি দিয়েছে। রোজভ্যালী, হেমাঙ্গিনী ইনফ্রাকন, জীবন সমৃদ্ধি, পৈলান গ্রুপ, ডিপ হায়ার পারচেজ লিমিটেডএই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার। সরকারি এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে রোজ ভ্যালী আইনি পরামর্শ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার এমডি শিবময় দত্ত। প্রয়োজনে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক কিরণ গিত্যে বলেন, ‘‘৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রোজ ভ্যালী-সহ পাঁচটি সংস্থাকে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে হবে। পাশাপাশি, ওই সংস্থাগুলি এখন বাজার থেকে নতুন করে আমানত সংগ্রহ করতে পারবে না।’’ আমানত সংগ্রহের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আমানতকারীর স্বার্থ-সংক্রান্ত ত্রিপুরা সরকারের বর্তমান আইন‘দ্য ত্রিপুরা প্রোটেকশন অফ ইন্টারেস্ট অফ ডিপোজিটার্স (ইন ফিনান্সিয়াল এস্টাবলিশমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০১১’ অনুযায়ী এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। জেলাশাসক কিরণ গিত্যে জানান, সম্প্রতি এই আইন অনুযায়ী পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা প্রশাসন ৪৮টি সংস্থাকে নোটিস দিয়ে রাজ্যে ব্যবসা করার ‘বৈধ নথি’ দেখানোর অনুরোধ করেছিল। যে সব সংস্থা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ‘বৈধ কাগজপত্র’ দেখাতে পারেনি বা যাদের কাজকর্মে ‘অসঙ্গতি’ ধরা পড়েছে, রাজ্য সরকার তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিচ্ছে। তারই প্রথম ধাপ হিসেবে ওই পাঁচটি সংস্থাকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থাগুলির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
রোজ ভ্যালী-র তরফে জানানো হয়েছে, ত্রিপুরা সরকার তাদের কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমের (সিআইএস) আওতায় ধরে নিয়ে এই নির্দেশ জানি করেছে। কিন্তু তাঁরা ‘টাইম শেয়ার’ প্রকল্প চালান। এই প্রকল্প সেবি-র আওতাতেও পড়ে না। এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও চলছে। শিবময়বাবুর বক্তব্য, “আমাদের প্রথমে শো কজ করা হয়। আমরা তার উত্তর দিই। তারপর কোনও রকম আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই সরকার নির্দেশ জারি করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনজ্ঞের পরামর্শ নিচ্ছি।” প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আদালতে যেতে পারেন বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।
|